অবশেষে বলিভিয়া জয় করল আর্জেন্টিনা। ১৫ বছর পর লা পাজ থেকে জয় নিয়ে ফিরল লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।
মঙ্গলবার রাতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মিটারের বেশি উচ্চতার মাঠ এরনান্দো সাইলসে ছন্দের জাদু দেখালেন লিওনেল মেসি।
পিছিয়ে পড়েও জয় ছিনিয়ে আনল লা আলবিসেলস্তেরা।
শুরুটা ভালো হয়নি অতিথিদের। সমর্থকদের মনে শঙ্কা জাগে, এই মাঠের রীতি এবারও ধরে রেখে হার নিয়ে বাড়ি ফিরবেন মেসির দল।
সেটা ভাবাই স্বাভাবিক ছিল। কারণ আর্জেন্টিনা শুরু থেকেই এলোমেলো খেলছিল। বলিভিয়ার রক্ষণে পৌঁছাতে গিয়ে বল হারিয়ে ফেলছিল পা থেকে।
সেই সুযোগে লিড নেয় বলিভিয়া। ম্যাচের ২৪ মিনিটে লেহান্দ্রো সাউলের চমৎকার ক্রসকে হেড করে গোলে পরিণত করেন মার্সেলো মার্টিনস।
৩১ মিনিটের মাথায় ব্যবধান ২-০ হতে পারত। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় আর্জেন্টিনা। মার্সেলো মার্তিন্সের ক্রসে হেড করেন কার্লোস সাউসেদো। কিন্তু অল্পের জন্য তা আর্জেন্টিনার জালে জড়ায়নি।
এমন ঘটনার পর যেন ঘুম ভাঙে আর্জেন্টিনার। নিয়মিতই বলিভিয়ার রক্ষণ ভেদ করতে চেষ্টা করেন ৩৬তম মিনিটে লুকাস ওকাম্পোসের একটি জোড়ালো শট গোল না হলেও বলিভিয়ার ভিত নাড়িয়ে দেয়। এর চার মিনিট পর পোস্টে লেগে ব্যর্থ হয় পারদেসের শট ।
বেশ কয়েকটি সুযোগ মিস হওয়ার পর প্রথমার্ধ শেষ হওয়া একটু আগেই ভাগ্য এসে ধরা দেয় নীল-সাদা জার্সিদের কপালে।
বিরতির ঠিক আগে বলিভিয়ার এক ভুলে সমতায় ফেরে আর্জেন্টিনা। অদ্ভুত এক গোল করেন লাউতারো মার্টিনেজ।
বল নিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন মার্টিনেজ। কিন্তু গোলে শট করতে পারেননি তিনি। বলিভিয়া ডিফেন্ডার হুয়ান কারাস্কো বল ক্লিয়ার করতে শট করেছিলেন, কিন্তু সেটাই মার্টিনেজের গায়ে লেগে ঢুকে যায় বলিভিয়ার জালে।
ওই গোলের পরই রেফারির বিরতির বাঁশি। ১-১ স্কোরলাইনে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে আক্রমণের ধার বাড়ায় আর্জেন্টিনা। সেই ধারে অনেকটা চুপসে যায় প্রথমার্ধের তাগড়া বলিভিয়া। ৬০তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি-কিক পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু মেসি সেটিকে গোলে পরিণত করতে পারেননি।
৭৫ মিনিটে মেসির পাস থেকে ডি বক্সের ভেতর বল পেয়েও তা জালে জড়াতে ব্যর্থ হন মার্টিনেজ। শট নিতে পারলেও তা ঠেকিয়ে দেন বলিভিয়া গোলরক্ষক কার্লোস লাম্পে।
তবে ৭৯ মিনিটের শটটি আর ঠেকাতে পারেনি কার্লোস লাম্পে। ডান প্রান্ত থেকে চমৎকার এসিস্টে মার্টিনেজকে বল মে থ্রু বল বাড়িয়ে দেন মেসি। মার্টিনেজ পাস দেন বক্সের ভেতর থাকা হোয়াকেন কোরেয়াকে। আর বাঁ পায়ে আড়াআড়ি নিখুঁত শটে জয়সূচক গোল করেন লাৎসিও ফরোয়ার্ড।
২-১ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
বাকি সময়ে বলিভিয়ার চেষ্টাগুলো নজরকাড়া ছিল। কিন্তু সমতা আর ফেরাতে পারেনি তারা।
রেফারির বাঁশিতে ২০০৫ সালের পর বলিভিয়ার মাটিতে জয়ের স্বাদ উপভোগ করে মেসির দল।
সব মিলে এই নিয়ে টানা ৯ ম্যাচ অপরাজিত থাকল আর্জেন্টিনা। বাছাই পর্বের দুই ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনা পেল পূর্ণ ৬ পয়েন্ট।