সংসদে কথা বলতে দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। সেই সঙ্গে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের প্রশ্ন বিকৃতির অভিযোগও করেছেন তারা।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত নির্বাচন যেটা হয়েছে, এটা কোনো নির্বাচন হয়নি। এটা হচ্ছে, একটা তামাশার নির্বাচন। সে নির্বাচনের মধ্যে বিএনপির যে সংসদ সদস্যরা জনগণের সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তারা আসলেই ভাগ্যবান মানুষ। পার্লামেন্ট হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের জায়গা। সরকার মনে করে, পার্লামেন্ট সবসময় তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। আর যারা তাদের বিরুদ্ধে থেকে সংসদে কথা বলতে চান, এসব বিষয় তারা খুব গুরুত্ব দেন না। কিন্তু যখন সরকার এবং সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা কথা বলতে থাকেন তাদের কোনো বাধা দেয়া হয় না। এই সংসদটা আসলেই যে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিতদের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান তখনই নিঃসন্দেহে আমাদের কিছু কথা বলার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকারি দল তাদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য, চিরস্থায়ী করার জন্য এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য পার্লামেন্ট তৈরি করেছে। সেই পার্লামেন্টে আসলে কী করা হচ্ছে- এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্যই আমরা আজকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আজকে পার্লামেন্টে যারা বিরোধী দলের সংসদ সদস্য আছেন তাদের ন্যূনতম কথা বলার যে অধিকার সে অধিকারটুকু দেয়া হচ্ছে না। সরকার সবসময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। আমাদের সংসদ সদস্যরা যে সব প্রশ্ন দিচ্ছেন সেই প্রশ্নগুলো বদলে দেয়া হচ্ছে। চিন্তা করা যায় না। আজকে সংসদের স্পিকারসহ যখন এসব প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে এটাকে আমি কোন ধরনের প্রতারণা বলব। এসব প্রতারণা করে তারা রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ করছে।
বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, আমরা সংসদে গিয়েছি একটাই কারণ, দেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা আছে সেটা রক্ষা করার জন্য। গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা পার্লামেন্টে গিয়েছি। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য সংসদে কথা বলতেই আমরা সংসদে গিয়েছি। কিন্তু আমাদের সংসদ সদস্যদের ন্যূনতম যে অধিকার, সেটুকু দেয়া হচ্ছে না। এটা কখনো মেনে নেয়া যায় না। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, সংসদে একটা শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয়। আমি বলি, উনার কথাটা সত্যিকার অর্থে একটি হাস্যকর এবং জাতির সঙ্গে তামাশা করা। এগুলো পরিহার করে আপনারা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর বোঝা যাবে, কারা জনগণের প্রতিনিধি আর কারা প্রকৃতপক্ষে বিরোধীদল।