দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশব্যাপী দুস্কৃতকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে রক্তাক্ত কর্মসূচির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এরই সর্বশেষ শিকার হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, এই নির্মম হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমার জানা নেই। এ ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি রাষ্ট্রের জন্য অশুভ সংকেত। তিনি দুস্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে গুরুতর আহত ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর আশু সুস্থতা কামনা করেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওয়াহিদা খানমের মতো উপজেলা পর্যায়ের একজন সর্বোচ্চ সরকারি কর্মকর্তার ওপর সন্ত্রাসীদের নৃশংস ও পৈশাচিক হামলার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হল, এই সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় বর্তমান সরকারের কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। এরা সন্ত্রাসকে আশ্রয় করেই নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চাচ্ছে। বিরোধী দল ও মতকে দমন করে যাচ্ছে রক্তাক্ত কায়দায়। এখন সরকারি কর্মকর্তারাও এদের হিংস্রতার শিকার হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মেজর (অব.) সিনহাকে হত্যাসহ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা যেভাবে সংঘটিত করছে তাতে দুস্কৃতিকারীরা উৎসাহ পাচ্ছে। দুস্কৃতকারীরা যেই হোক ইতোপূর্বে যদি তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হতো তাহলে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্রমণের শিকার হতেন না। দেশে এখন আইন-কানুনের কোনো বালাই নেই। হত্যা, খুন, জখম, টাকা পাচার, মানব পাচার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোপাট, টেন্ডারবাজি ও জবরদস্তি কায়েমের মতো অনাচার আড়াল করতেই দেশব্যাপী দুস্কৃতকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে রক্তাক্ত কর্মসূচির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এরই সর্বশেষ শিকার হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম।
তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসনের বিলুপ্তি ঘটিয়ে, গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে নাৎসী কায়দায় দেশ পরিচালনার জন্যই এখন সন্ত্রাসবাদের দোর্দণ্ড প্রতাপ চলছে। দুর্নীতি ও রক্তাক্ত সন্ত্রাসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত এই সরকার সারা দেশে অশান্তির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। যে দেশে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্ত্রাসীদের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সেদেশে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা কত অনিশ্চিত তা ব্যাখা করে বলার কোনো অবকাশ নেই।