সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যে স্বাধীনতা রয়েছে বর্তমান কমিশন সরকারের কাছে সেই স্বাধীনতা সমর্পণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী।
শুক্রবার (২৮আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে সাবেক ছাত্রদলনেত্রী দিলরুবা শওকতের রুহের মাগফিরাত কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, কেউ নিজের স্বাধীনতা খর্ব করে? কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে স্বেচ্ছায় নিজেদের স্বাধীনতা সমর্পণ করেছে। কারণ গণতন্ত্র থাকলে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র সত্তা। আপনারা আত্মসমর্পণ করে নিজেদেরকে হিজড়ায় পরিণত করেছেন।
তিনি বলেন, সংবিধান তাদেরকে নিজস্ব স্বাধীনতা দিয়েছে আর ১৯৭২ গণপ্রতিনিধি অধ্যাদেশ তাদের সেই ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতাকে আইন করে সরকার নিজের হাতে রাখবেন। শেখ হাসিনা হবেন একক ক্ষমতার অধিকারী।
রিজভী বলেন, বাকশাল মানে একদলীয় শাসন, বাকশাল মানে অন্য কারো কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে না, গণতন্ত্র থাকবে না, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে না। কেউ সরকারের সমালোচনা করলে তাকে জননিরাপত্তা আইনে আটকে রাখা হবে।
বিএনপির এ মুখপাত্র আরও বলেন, সুস্থ গণতন্ত্র নেই বলে আমাদের নানাভাবে নানা কৌশলে কথাগুলো বলতে হচ্ছে। কথার মধ্যে যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে তবে নিস্তার নেই। ডিজিটাল আইন আছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার একটি অস্ত্র, নানা ধরনের গালাগালি একটি অস্ত্র, ডিজিটাল আইন একটি অস্ত্র। এরপর আরও বড় অস্ত্র আছে বিচারবহির্ভূত হত্যা। এগুলো সব সরকারের হাতে বিরোধী কণ্ঠকে রোধ করার জন্য, মিছিল বন্ধ করার জন্য, রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করার জন্য। সরকারের যখন যে অস্ত্র ব্যবহার করা দরকার সেই অস্ত্র তারা নির্বিঘ্নে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বোধোদয় হয়েছে যে কখন কী ঘটে যায় বলা মুশকিল। তাদের নেতাকর্মীদের বলছেন, ‘সাবধান বেশি বাড়াবাড়ি কইরেন না। কখন কী হয় বলা যায় না।’
ওবায়দুল কাদের সাহেব ১২ বছর পার হয়ে গেল এর মধ্যে বরকতের টাকা পাচার হলো, ফরিদপুরের ছাত্রলীগের সভাপতির টাকা পাচার হলো, করোনা পরীক্ষার নকল সনদপত্র দেয়া হলো, রিজেন্ট, জিকেজির মত ভুয়া হাসপাতালে ভুয়া সনদপত্র দেয়া হলো- এ কথাগুলো আগে বলেননি কেন? আজকে আপনাদের দলের যে সিন্দুক সেই সিন্দুক খুলে কেন আমরা সম্রাটকে দেখছি? খালেদকে দেখছি, শামীমকে দেখছি। তো এই কথাগুলো যদি আগে বলতেন এবং তা সত্যি সত্যি প্রয়োগ করতেন তাহলে আজকের এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। আপনার পুলিশ বাহিনী আছে অস্ত্র আছে কিন্তু জনগণ আপনার নেই। আপনারা ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন থেকে এসব কথা বললেই নেতাকর্মীরা অনেকটা সতর্ক থাকতো।
সংগঠনের সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।