খুলনা, সাতক্ষীরা ও বান্দরবানে পুলিশ এবং র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া মৌলভীবাজারে বিজিবির গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. শাহ আলম নামে এক ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় বন্দুক, ৪০ হাজার পিস ইয়াবা এবং ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঘুমধুমের বেদবুনিয়া বাজারের কাছে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত শহ আলম কক্সবাজারের উখিয়া ১নং কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা থেকে শাহ আলমকে আটক করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে নিয়ে সীমান্তে অভিযানে গেলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মাদককারবারিদের সঙ্গে গুলিবিনিময় হয়। এ সময় শাহ আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল (৫২) র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে বাগেরহাটের রামপাল থানাধীন খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ভেকুটিমারি এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। র্যাব-৬ এর অধিনায়ক রওশানুল ফিরোজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে রামপালের ভেকুটিমারি এলাকায় অভিযানে যান। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর গুলি চালালে তারাও পাল্টা গুলি চালান। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ কামালকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পিস্তল, গুলি, ছুরি ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কামালের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ২৫টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহ ইউনিয়নের কয়ারবিলে দু’পক্ষের ‘গোলাগুলিতে’ লিয়াকত আলী নামে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লিয়াকত আলী সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামের মৃত মোসলেম আলী সরদারের ছেলে। তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সাতক্ষীরা সদর থানায় তার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীন জানান, ভোরে কয়ারবিল এলাকায় দুই পক্ষের গোলাগুলি চলছে এমন সংবাদে সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। তিন বলেন, এ সময় তার পাশে একটি রিভলবার, দুই রাউন্ড গুলি, একটি হাঁসুয়া, ৫০ বোতল ফেনসিডিল ও ২০০ পিস ইয়াবা পড়েছিল। তাৎক্ষণিক গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিজিবির গুলিতে বদরুল ইসলাম (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত যুবক একজন চোরাকারবারি। ঘটনাস্থল থেকে ২ লাখ পিস ভারতীয় নাসির বিড়ি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের মনু নদে নির্মাণাধীন রাজাপুর ব্রিজের পার্শ্ববর্তী শুখনাভী চরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বদরুল ইসলাম হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের আত্তর আলীর ছেলে। বিজিবির আলীনগর ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, ভারত থেকে চোরাকারবারিরা নাসির বিড়ি নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে বিজিবি আগে থেকেই ঘটনাস্থলে ওঁৎ পেতে ছিল। রাত সাড়ে ৩টার দিকে চোরাকারবারিরা নৌকাযোগে বিড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে নৌকা থেকে বিড়ি নামাচ্ছিল। এ সময় বিজিবি বাঁশি বাজালে তারা বিড়ি রেখে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরা বিড়ি উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসতে চাইলে চোরাকারবারিরা তাদের দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বিজিবির ওপর হামলা চালায় ও বিড়িগুলো নিয়ে যেতে চায়। এমনকি ৫০ হাজার পিস বিড়ি নিয়েও যায়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি এক রাউন্ড গুলি করে।