ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ইউটিউব দেখে কমলা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন প্রবাস ফেরত যুবক খোকন মিয়া। বাণিজ্যিক ভাবে দার্জেলিং ও চায়না-থ্রী জাতের কমলার আবাদ করেছেন তিনি। এবার ফলনও বাম্পার হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কমলা বাগানের ছবি ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই আসছেন খোকন মিয়ার কমলা বাগান দেখতে। জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক খোকন মিয়া তার দুই বিঘা জমিততে ৬০টি দার্জেলিং ও ১০০ টি চাইনা থ্রী কমলা চারা রোপণ করে বাগান গড়ে তুলেছেন। ইউটিউব দেখে বাগানের পরিচর্যা করে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। বাগানের গাছে-গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলছে পাকা রসালো কমলা। প্রতিদিন দর্শনার্থীরা আসছেন কৃষক খোকন মিয়ার কমলা বাগান দেখতে। পাশাপাশি গাছ থেকে পাকা ও তাজা কমলাও ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতা সোহাগ মিয়া জানান, সারাজীবন আমরা বাজার থেকে কমলা ক্রয় করেছি। তবে আজ কমলা বাগান থেকে দেখে দেখে পাকা কমলা ক্রয় করলাম। ফর্মালিন মুক্ত সম্পূর্ণ অর্গানিক ফল পেলাম। কৃষক কৃষক খোকন মিয়া জানান, ইউটিউবে চুয়াডাঙ্গার এক কৃষকের কমলা আবাদের ভিডিও দেখে তার সাথে যোগাযোগ করেন। পরে ওই বাগান পরিদর্শন করে ওই কৃষকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সেখান থেকে চায়না-থ্রী ও দার্জেলিং জাতের কমলার চারা এনে বাগানে রোপণ করেন। মাত্র দুই বছরের মাথায় তার বাগানে চোখ ধাঁধানো কমলার ফলন পেয়ে অনকে খুশি কৃষক খোকন মিয়া। খোকন মিয়া আরও বলেন, গতবছর ১ হাজার থেকে বেশি কেজি কমলা বিক্রি করেছি। এবছর দিগুণ ফলন এসেছে। প্রতি কেজি চাইনা থ্রী কমলা ১৮০ টাকা কেজি ও দার্জেলিং কমলা ২৫০ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। বাগান থেকে ক্রেতারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয়নি। দর্শনার্থীরা এসে দেখে বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগান করার সময় গ্রামের অনেকেই বলেছিলেন এ এলাকায় কমলার চাষ হবে না। আমি মানুষের কথায় কান না দিয়ে নিজের মত করে চেষ্টা করেছি। আমার বাগান থেকে এবার অন্তত ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এদিকে কৃষক খোকন মিয়ার কমলা চাষ দেখে এবার অন্য কৃষকরাও কমলা চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এলাকার অনাবাদি জমিতে এবার কমলা চাষ করতে আগ্রহী স্থানীয় কৃষকরা। বিজয়নগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, একাধিকবার পরীক্ষামূলক ভাবে এ অঞ্চলে কমলার চাষ করেও সুফল পায়নি। তবে যেহেতু খোকন মিয়া সফল হয়েছেন, তাই কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ অঞ্চলে কমলার আবাদ বৃদ্ধির জন্য প্রর্দশনী দেয়া হবে।