ভোরের সূর্য উঁকি দিতেই বাগান ঝলমল হয়ে উঠে। পুরো বাগান জুড়ে যেন সবুজের সমারোহ। বাগানের প্রতিটি মালটা গাছে প্রচুর মালটা ধরে আছে। মালটা বাগানের এ অপরুপ দৃশ্য দেখা গেল সদরের শিবরামপুর গ্রামের একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা ওবায়দুল ইসলামের বাগানে। এ বছর তিনি ৮-১০ লক্ষ টাকার বারি-১ মালটা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। নতুন বারি-১ জাতের এ মালটা চাষে তিনি রিতীমত বাজিমাত করেছেন। তার এ বাগান দেখতে ছুটে আসছেন দূর-দূরান্তের অনেক কৃষক ও সাধারণ মালিক। তার বাগানে রয়েছে ৫শ’২০টি মালটা গাছ। প্রতিটি গাছে ৫০-৬০টি করে মালটা ধরে আছে। যার প্রতিটি মালটার সাইজ প্রায় ৩শ’ গ্রাম। ৩-৪ টি হয় ১ কেজি । মালটা রং সবুজ। আবার কোনটা হলুদ-সবুজ। কৃষি উদ্যোক্তা এ সফল চাষী ওবায়দুল জানান, নিজের ২ একর ৫০ শতক জমিতে তিনি এ চাষ করেছেন। ২০২২ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবন নগর থানার ইদ্রিস মিয়ার বাগান থেকে তিনি উচ্চ ফলনশীল বারি-১ জাতের মালটার চারা সংগ্রহ করেন। তারপর নিজের জমিতে এ চারা রোপন করেন। চারা রোপনের ১ মাস পর গাছের পরিচর্যা বাড়িয়ে জৈব সার প্রয়োগ করা হয়। চারা রোপনের ১০ মাস পর গাছে যখন ফুল আসা শুরু হয় তখন গাছে পরিচর্যা আরো বাড়াতে হবে। এ সময় প্রতিটি মালটা গাছে সার দেওয়ার পাশাপশি নিয়মিত পানি দিতে হবে । ফুল আসার ২ মাস পর গাছে ফল ধরে। এ ফল গাছে ৬ মাস থাকার পর পরিপক্ক হয়। তিনি আরো জানান,২০২৩ সালে এ বারি-১ মালটা চাষে আমার প্রথম সাফল্য আসে। প্রথম বছরে আমি ৭০-৮০ হাজার টাকায় মালটা বিক্রি করি । বর্তমানে এ বছর ২ একর ৫০ শতক জমিতে মালটা চাষ করেছি । আমার মালটা বাগানে প্রতিটি গাছে এ বছর আশানুরুপ ফল ধরেছে। এ মাসের শেষে ও নভেম্বর মাসে বাগান থেকে মালটা উত্তোলন করা হবে। চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, নড়াইল, বাজবাড়ি ও পাশ্ববর্তী জেলার ব্যাপারী আমার বাগান থেকে মালটা ক্রয় করে নিয়ে যায়। পাইকেরি ৫৫ টাকা হিসেবে আমি বাগান এ ব্যাপারিদের কাছে বিক্রি করা হয় । এ বছর ৮ থেকে ১০ লক্ষ বিক্রির আশা আছে আমার। মাগুরা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, এ জেলায় অধিকাংশ চাষী মালটা চাষে অগ্রসর হচ্ছে । আমরা জেলায় মালটা চাষে চাষীদের উদ্ধুদ্ধ করছি । এ চাষে জেলার চাষীদের আমরা যথাযথ পরামর্শ প্রদান করছি । জেলার শিববামপুর গ্রামের ওবায়দুর মালটা চাষে বেশ সাফল্য পেয়েছে। তার মালটা বাগান আমরা পরিদর্শন করেছি। এটি জেলার অন্যতম একটি মালটা বাগান। আমরা জেলায় বিভিন্ন মালটা বাগানে গিয়েছি কিন্তু ওয়াবদুলের মালটা বাগানের ফল বড় এবং রাসালো । দেশের বিভিন্ন স্থানের চাষীরা তার মালটা বাগানে আসে এবং পরামর্শ নেয় । ওয়াবদুলের মতো আরো অনেক মালটা চাষী জেলায় আছে তাদের আমরা সঠিক ভাবে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতার করার চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি জেলার অন্য চাষীরা এ চাষে আরো উদ্ধুদ্ধ হবে।