ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের’ চেতনায় একটি শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলমান ৭৯তম অধিবেশনের দ্বিতীয় ও প্রথম কমিটিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
দ্বিতীয় কমিটিতে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব দ্বন্দ্ব, আর্থিক সংকট, মুদ্রাস্ফীতি, উচ্চ দ্রব্যমূল্য, পরিবেশগত অবক্ষয় এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসহ সমসাময়িক চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি ও সহনশীলতা নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা; অবৈধ আর্থিক প্রবাহ রোধকরণ; তারুণ্য নির্ভর কার্যক্রমের জন্য তরুণদের মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং ডিজিটাল দক্ষতা নিশ্চিতকরণ; এবং সহনশীল ও টেকসই ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য ভিত্তি হিসেবে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
প্রথম কমিটিতে বক্তব্য প্রদানের সময় পররাষ্ট্র সচিব পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল এবং যুদ্ধ ও সহিংসতার সংস্কৃতির বিপরীতে শান্তির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল রাষ্ট্রকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে জাতিসংঘের পলিটিকাল ও পিসবিল্ডিং অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল খালেদ খিয়ারির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যে দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন।
অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল খিয়ারি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদানের প্রশংসা করেন এবং এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এ সময় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সঙ্গে গাম্বিয়া ও পেরুর অংশীদারিত্বের বিষয়টি উল্লেখ্য, তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অন্যান্য দেশকে সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ভূমিকাকে সাধুবাদ জানান।
খালেদ খিয়ারিকে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযাত্রায় জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন। তারা দুজনই মানবাধিকার, উন্নয়ন ও আইনের শাসনের মতো ক্ষেত্রসমূহে একযোগে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেন।