কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল দেশব্যাপী। রাজধানীর সন্নিকটে থানাগুলোও তাণ্ডব থেকে নিস্তার পায়নি।
আন্দোলন ঘিরে নাশকতা ও অরাজকতায় ঢাকা জেলায় ২৪টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় সাড়ে তিন শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুল্লাহিল কাফী।
এর মধ্যে মোট ২৪টি মামলার দুটিই ঢাকার ধামরাই থানায়, দুটি কেরানীগঞ্জের দুই থানায়, আশুলিয়া থানায় ৫টি ও সাভার থানায় ১৫টি মামলা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কতজন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত করেননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলন ঘিরে সাভারে ২০টিরও অধিক প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া শপিংমল ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সে চালানো হয়েছে তাণ্ডব। তবে এসব সহিংসতার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ১৬ জুলাই পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন। পরবর্তীতে ১৭ জুলাই সারাদেশে বাংলা ব্লকেড ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে সাভারে পাকিজা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা।
এতে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। টানা তিনদিন সংঘর্ষে মারা যান অন্তত ১০ জনের অধিক। এতে করে আন্দোলনকারীরা পশু সম্পদ অফিস, শপিংমল ও পুলিশ বক্সসহ নানা স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়। তবে সাভারের আন্দোলনকারীদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছিল না বলে দাবি করেছে পুলিশ। এ আন্দোলনে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সরাসরি জড়িত থাকার সম্পৃক্ততা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, ১৮ ও ১ঌ জুলাই সাভারসহ ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় দখল নিয়ে জামায়াত শিবির ও বিএনপির নেতারা তাণ্ডব চালায়। এ সময় মহাসড়কের আশপাশে থাকা মার্কেট, শপিংমল ও বিভিন্নস্থাপনা ভাঙচুর করে। সে সময় চুরি ও বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এতে জনসাধারণকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। সেসব ঘটনায় ঢাকা জেলা পাঁচ থানায় মোট ২৪টি মামলা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫০ জনের অধিক গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসামিদের মধ্যে কোনো নিরপরাধ মানুষ গ্রেপ্তার হয়নি। গোয়েন্দা রিপোর্ট, ভিডিও ফুটেজ, ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছাত্রদের গ্রেপ্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তথ্য নিশ্চিত হয়েও সতর্ক করে পড়াশোনা করতে বলা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে পুলিশ হয়রানি করবে না।