বাংলা ও বাঙালির অবিচ্ছেদ্য অংশ পহেলা বৈশাখ। অসাম্প্রায়িকতার যেনো অনন্য প্রতীকী। বর্ষবরণের আনন্দে মেতে উঠেছে সবাই, পান্তা ইলিশ তারাই একটি অংশ। মাছে ভাতে বাঙালি খ্যাত পান্তা ইলিশ ছাড়া কি আর বর্ষবরণ চলে!
কিন্তু তিনু (ছদ্ম নাম) ও তো বাঙ্গালি, পান্তা তার প্রতিদিনের প্রধান খাদ্য, কিন্তু মাছ তো জুটে না। তবে কি তার প্রতিদিনই বর্ষবরণ?
ঝি ঝি পোকার নিদারুণ শব্দেও পরম নিশ্চিন্তে ঘুমায় তিনু, বাঙালির পহেলা বৈশাখ নিয়ে নেয় তার উত্তেজনা, পান্তা ইলিশ এর আকাঙ্খা আর করে না সে। ভোর হতেই এক রাস কোলাহলে তার ঘুম ভেংগে যায়।
অসাম্প্রদায়িকতার বাণী নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। পবিত্র মাহে রমজানের জন্য ঘটা করে আর পান্তা ইলিশ খাওয়া হয়না সবার। তিনুর ভাবনার কোনে বিষন্ন কালো মেঘের ভির। বৈশাখি ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলেছে। ঘন কালো মেঘের এই ঝড়ো হাওয়ায় হাল ধরে রাখায় যেনো দায়। বারে বারে ফিরে আসে দক্ষিণা মেঘ চিন্তার কারণ হয়ে, আজ ইফতার এ পান্তা ভাত জুটবে তো কপালে? অঝোরে নামে বৃষ্টি থামার নাম নেই মনে।
ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলো, সুদীপ্ত বার্মন পান্তা ইলিশ এর সাথে কিছু ইফতারি নিয়ে তিনু কে পহেলা বৈশাখ ও মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানালেন। তিনুর তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে বৃষ্টি শেষে তার শীতল হাওয়া বয়ে গেলো। শুকরিয়া জ্ঞাপন করে ইফতার করলো। এমনি করে আর কতদিন! অনিশ্চিত কালবৈশাখী ঝড় থেকে কতদিন বাঁচবে? অসাম্প্রায়িকতার জয়গান গেয়ে তিনুদের বৈশাখে আগলে রাখে। মাছে ভাতে বাঙালির ভাত তো অন্তত জুটে। মাছ তো সাধ্যর বাইরে, স্বাদ এ আর কি আসে যায়।
লেখিকা
রোকাইয়া আক্তার তিথি
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়