আজ ৯ অক্টোবর বুধবার শ্রী শ্রী যুত মদন গোপাল জিউ বিগ্রহ ঠাকুর মন্দির কমিটি তাদের মন্দিরে হামলা ও জায়গা দখলের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলনে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে প্রতিবাদটি উপস্থাপন করেন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোজ কুমার দাস গোবিন্দ। তিনি বলেন, শ্রী শ্রী যুত মদন গোপাল জিউ বিগ্রহ ঠাকুর মন্দির, ৯৫/৯৬ ঋষিকেশ দাস রোড, সূত্রাপুর, ঢাকা-১১০০। প্রতিষ্ঠাতা- ললিতা বৈষ্ণবী, স্বামী- গঙ্গাচরণ দাস নিঃসন্তান দম্পতি। জমির পরিমাণ ৫৩০ অযুতাংশ। মন্দির প্রতিষ্ঠাকাল ২৭ শে আষাঢ় ১২৯০ বাংলা। সি. এস. পর্চায় জমির মালিক নিরূপমা দাস্যি ওরফে ললিতা বৈষ্ণবী, স্বামী- গঙ্গাচরণ দাস, যাহা লাখেরাজ সম্পত্তি। যে সম্পত্তির কোন কর হয় না, নিষ্কর সম্পত্তি। এই সম্পত্তি দেবোত্তর করে ভগবানকে উৎসর্গ করে নিজেই সেবাইত নিযুক্ত হন এবং তাঁর মৃত্যুর পরবর্তীতে তিনি হরমোহন দাস-কে পরবর্তী সেবাইত নিযুক্ত করেন। গীতা রানী এই মন্দির এবং মন্দিরের বাড়ির কেহ না, তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যা বলেছেন। এই বাড়ীতে তিনি কখনো থাকেননি। গীতা রানি বলেছেন তিনি এক মুসলিম পরিবারের সাথে থাকেন। সত্য হল এই, গীতা রানী মুসলিম পরিবারের সাথে থাকেন না। তিনি থাকেন এক মুসলিম লোকের সাথে, তার নাম সামছু এবং গীতা রানী তার পিসির বাড়ী ৫ কালিচরণ সাহা রোড, মিল ব্যারাক গেন্ডারিয়া থাকেন। অনেকদিন যাবত গীতা রানি সামছু নামের ভদ্রলোকের সাথেই থাকেন। ৯৫ নং ঋষিকেশ দাস রোডের দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর রশিদের কপিতে হরমোহন দাস সেবাইত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আছেন। ২০১৩ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী গীতা রানী অবৈধভাবে মন্দির দখল নিতে আসলে এই মন্দিরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সভাপতি শিবনাথ ঘোষ শিবু এবং গোবিন্দ এর নেতৃত্বে এলাকার সব হিন্দু এবং হিন্দু সংগঠন মিলে দখলদারদের হাত থেকে মন্দির উদ্ধার করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে মিস আপীল মামলা চলমান অবস্থায়। বর্তমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক, থানা পুলিশ কোন ভূমিকা নিচ্ছে না, সেনা টহলও নেই। সামগ্রিক অবস্থার বিচারে এই সুযোগে গীতা রানী, সামছু ও মান্নান গং-রা প্রায় ২০০/২৫০ জন লোকবল ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গত ১২ই সেপ্টেম্বর বিকাল ৩.১৫ ঘটিকায় দ্বিতীয়বারের মতো মন্দিরে হামলা চালায়। প্রথমে সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে এবং হার্ডডিক্স নিয়ে যায় যাতে কোন ফুটেজ না পাওয়া যায়। বিগ্রহের অলংকার ও পূজার জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কার্তিক রায়ের বাসায় ভাংচুর করে, অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় এবং কার্তিক রায়ের স্ত্রী শিল্পী রানি রায় এর উপর রড দিয়ে হামলা চালিয়ে জখম করে, তার দুই মেয়ের গায়ে হাত দেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তারা মন্দিরের গেইটে এবং সমস্ত মন্দিরে ১৭টা তালা মেরে দেয়। মন্দির কমিটির সেক্রেটারী মনোজ কুমার দাস গোবিন্দ মন্দিরটি মেইনরোডে অবস্থিত হওয়ায় তার ডাকে এলাকাবাসী ও লোকজন জড়ো হয় এবং সকলে এগিয়ে আসে, হিন্দু সংগঠনগুলোও এগিয়ে আসে এবং থানায় যায়। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরে পুলিশ আসে পরে সেনাবাহিনী এসে তালা ভেঙ্গে মন্দির খুলে দেয়। উল্লেখ্য, সূত্রাপুর থানায় একাধিকবার মন্দির দখল ও হামলার অভিযোগ দিতে গেলে অফিসার ইনচার্জ নানারকম অজুহাত দিয়ে অভিযোগ গ্রহণ করেননি। শুধুমাত্র মিথ্যা আশ^াস দিয়ে যাচ্ছেন। এজাহার ও মামলা নিচ্ছে না। এমতাবস্থায় মন্দিরের নিয়মিত সেবাপূজা কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটছে এবং সকলে আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ব্যাপারে মন্দির কমিটির সদস্যবৃন্দ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন পাশাপাশি তারা মন্দিরে যেন তাদের সেবাপূজা কার্যক্রম নিবিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারেন এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন। প্রতিবাদ সমাবেশে মন্দির কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।