বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ সর্বগ্রাসী, ফ্যাসিবাদী সরকার পুরো দেশকে গ্রাস করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ফ্যাসিবাদীদের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা। তারা যেসব অপকর্ম করে এবং মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়, তা লোকচক্ষুর অন্তরালে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়। আওয়ামী লীগ গত দেড় দশক ধরে সুকৌশলে সেটা করে আসছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে বাংলাদেশ’র সংবাদ মাধ্যম : দুঃশাসনের দেড়-দশক শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক আমলা ইসমাইল জবিউল্লাহ। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, খায়রুল কবির খোকন, পেশাজীবীদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক রুহুল আমিন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, গণফোরামের আবু সাইয়্যিদ, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ন্যাপ ভাসানীর এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল ইসলাম নুর প্রমুখ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার পুরো সমাজকে নষ্ট সমাজে রূপান্তর করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু রাজনীতি, সংসদ, গণমাধ্যম নয়; এই দানবীয় সরকার প্রতিটি ক্ষেত্র বিনষ্ট করে দিয়েছে। তারা দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে বলতে হচ্ছে আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে যারা জোর করে, অবৈধভাবে এবং অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে, তারা নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে, তাদের পুরোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, সেটা করার জন্য তারা সংবিধান পরিবর্তন করেছে, সংসদকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, প্রশাসন এবং পুরো গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। কর্পোরেট গণমাধ্যম তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো সবাই টিভি চ্যানেল বা পত্রিকার মালিক। তারা সবাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কেউ কিন্তু টাকা পাচারের বিরুদ্ধে কথা বলে না। আসলে গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী রেখেছে। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মী খুন করেছে। চল্লিশ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে শুধু দেশের মানুষ নয় বিদেশীরাও বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। তারা সবাই আপনাদের সঙ্গে আছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেলিাম আবারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করতে হবে। এরপর জনগণের ভোটে একটি দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।