হত্যা-নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে তারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান।
কংগ্রেসম্যানদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও অপরজন রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিক। তারা মোট ১১ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামছু-দৌজা নয়ন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো জানান, সকাল ৯টায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমন্বয় সংস্থা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের অফিসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম সহ ইউএসের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কংগ্রেস প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে পরিদর্শনে যান। সেখানে তারা ১২ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম, ১১ নম্বর ক্যাম্পে শরণার্থীদের লার্নিং সেন্টার, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন। দুপুরে কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এছাড়া বিকালে কক্সবাজার শহরে অবস্থিত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অফিসে সরকারি কর্মকর্তাদের বৈঠক করবেন। কংগ্রেস প্রতিনিধিদল কক্সবাজার সফরকালে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প সফর করে রোহিঙ্গাদের আর্থিক অবস্থাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিলেন আরও কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা। এরফলে সবমিলিয়ে এখানে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১২ লাখের বেশি।
মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও বর্তমানে বিশাল এ জনগোষ্ঠী নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরানোর চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার বারবার আশ্বাস দিলেও একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়নি। মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।