চৈত্রের বৃষ্টিতে মাঠের ফসল সতেজ হয়ে উঠলেও মাত্র ১০ মিনিটের শিলা বৃষ্টিতে খুলনার তরমুজ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। আকষ্মিক শিলা বৃষ্টিতে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রার প্রায় দুই শত হেক্টর জমির তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও কয়রার বেশ কিছু বিলে বৃষ্টির পানি জমে তরমুজের গাছ ও ফল নষ্ট হচ্ছে। চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে কয়রার আমাদী ও বাগালী বিলের তরমুজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবারও কয়েকটি স্থানে শিলা বৃষ্টির ফলে তরমুজের চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিতে কয়েকটি বিলে পানি জমে গেছে। কয়রার আমাদি ইউনিয়নের তরমুজ চাষি পুলকেশ বৈরাগী বলেন, ১০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ চাষ করেছি। এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে ফলনও ভালো হয়েছিল। আশা করেছিলেন দ্বিগুণ লাভ হবে। তবে বিক্রির উপযোগী হওয়ার আগেই ১০ থেকে ১৫ মিনিটের শিলা বৃষ্টিতে কারণে সব তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে এখন আমরা নিঃস্ব প্রায়। একই এলাকার কৃষাণী চপোলা বৈরাগী জানান, ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করে দ্বিগুণ লাভের স্বপ্ন দেখিেছলাম। তবে ফল তোলার আগে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে সমস্ত ক্ষেতের তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। দাকোপের চুনকুড়ি বিলের চাষি অপূর্ব বলেন, ভাল ফলন হয়েছিল। এখনও ১০ থেকে ১৫ দিন পরে তরমুজ বিক্রির উপযোগী হত । আমাদের এদিকে শিলা বৃষ্টি হয়নি। তবে বৃষ্টির কারণে বিলে পানি জমে ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত পানি সরানোর ব্যবস্থা না হলে সব গাছ ও ফল নষ্ট হয়ে যাবে। কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অসিম কুমার দাস বলেন, শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ২শ হেক্টরের মতো তরমুজ ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাহার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা করছি। দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, এদিকে শিলা বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টিতে বিলে ক্ষতি হওয়ার মত পানি জমেনি। আর যতটুকু জমেছে সেই পানি আশু নিস্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আশা করি তরমুজ চাষিদের কোন ক্ষতি হবেনা। খুলনা জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর খুলনা জেলায় ১২ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে কয়রা উপজেলায় ১২শ’ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করা হয়েছে। খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কয়রায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি না বাড়লে অন্য কোথাও ক্ষতির শঙ্কা নেই। তিনি আরোও বলেন কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।