ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার ৭ যাত্রী নিহত হয়েছে, এতে আহত হয়েছে আরো ২ জন,নিহতের মধ্যে একজন ছিলেন গর্ভবতী নারী। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে কালিকাপুর রেল ক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত করে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সূবর্না এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল দশটায় বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় একটি অবৈধ ক্রসিং দিয়ে পার হওয়ার সময় যাত্রীবাহী অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশায় থাকা ৬ যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে আরো এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরো দুইজন। বুড়িচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তা ডাক্তার মীর হোসেন মিঠু জানান, একজন হাসপাতালে আনার পথেই মৃত্যু বরন করে আর বাকী দুই জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। নিহতরা হলো বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল গ্রামের ৬ জন ও খুদাইধুলী গ্রামের একজন। কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশের এস আই মোস্তফা থেকে প্রাপ্ত নিহতরা হলেন, রফিজ আলী (৬৫) , লুৎফা বেগম (৬৫), শাহিনুর আক্তার (৩৩), সফরজান বেগম (৬৫) আলী আহমেদ (৭৭) হোসনেয়ারা (৬০) ও অটোচালক শাহজাহান মিয়া (৪০) ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শী মোর্শেদা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সকাল ১০টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা গামী ট্রেনটি লাইনের উপর দিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে দ্রুতগতির ট্রেনের সামনে পড়ে অটোরিকশাটি ছিন্নভিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই ড্রাইভারসহ সাতজন নিহত হয়ে যায়,আর দুই জন কে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যায় পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ এ পাঠানো হয়,তিনি আরো জানান এই রাস্তায় দীর্ঘ দিন চলাচল করে দেখতে পেয়েছেন কিছুদিন পর পর এখানে মানুষ দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে, তিনি প্রশাসনের কাছে এখানে একটি নিরাপদ ক্রসিং ব্যবস্থা চালুর দাবী করেন। ঘটনাস্থলের পাশে উওরগ্রামের বাসিন্দা অবসর প্রাপ্ত সৈনিক হাসিবুল বলেন, চোখের সামনে এভাবে আর কত মানুষের মৃত্যু দেখব,তিনি সরকারের কাছে এখানে একটি নিরাপদ ক্রসিং এর দাবি জানান। বাকশীমূল উত্তর পাড়ার ধনু মিয়া জানান তার পাশের বাড়ি এক ঘরের দুইজন নিহত হয়েছে, কবর খুড়ে এসেছেন। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নিহত দুই জন ভোটার আইডি সংশোধন সংক্রান্ত কাজে কালিকাপুর বাজারে অবস্থিত ২ নং বাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছিলেন।বাকিদের কেউ পরিষদের উদ্দেশ্যে আবার কেউ কালিকাপুর বাজারে খরচের জন্য যাচ্ছিলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রেলওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান তিনি জানান,কালিকাপুর রেলক্রসিং এর রাস্তাটি এলজিআরডি আমাদের অনুমতি ছাড়া করেছে তাই আমরা এখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও জনবল নিয়োগ দিতে পারি নাই। রেলওয়ে আইন মেনে রাস্তাটি নির্মান করলে আজকে এই ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটতো না এবং এতো গুলো মানুষের প্রানহানি হতোনা। এই বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর মোবাইল ফোনে জানান,আমরা রেললাইন এর উপর অংশে কোন রাস্তা করি নাই, রেলপথ এর নিচ পর্যন্ত করেছি, উপর অংশে রাস্তা নির্মান করলে অবশ্যই এনওসি নিয়েই করব। ওসি আরো জানান, ট্রেনের ধাক্কায় নিহতদের দেহ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে পুলিশ এসে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করবেন।