খুলনার বটিয়াঘাটা থানার সাবেক ওসি শেখ আবু বকর সিদ্দিক ও তার স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া পারুলের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অপ্রদর্শিত প্রায় ৫১ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বৃহস্পতিবার নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার (১ম ফেজ) ১০নং রোডে ১৪২নং বিলাসবহুল বাড়িটি ক্রোক করে তার সামনে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়। একই সাথে ঈদ উপলক্ষ্যে শেখ আবু বকর সিদ্দিকের ছেলেকে উপহার দেয়া ৫২ লাখ টাকার গাড়ি ও ক্রোক করার প্রক্রিয়া চলছে। জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৩৩ লাখ ৮৯৫ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শেখ আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৮/২১ নম্বর মামলা এবং ওই সম্পদ স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া পারুলকে হস্তান্তরের অভিযোগে সুলতানা রাজিয়া পারুল এবং শেখ আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৯/২১ নম্বর মামলা দায়েরে করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোঃ আল-আমিন। জানা যায়, মামলা চলাকালীন সময় অপ্রদর্শিত এই সম্পত্তি যাতে হস্তান্তর করতে না পারে এ জন্য ২০২২ সালের ২৬ মে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করা হলে বিচারক এইসব সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় (১ম ফেজ) ৫ কাঠা প্লটের ওপর ৫ তলা ভবনটি ক্রোক করে দুদক। এসময় ভবনে থাকা ভাড়াাটিয়াদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলা হয়। বাড়ির সামনে টাঙানো নোটিশে বলা হয়- ‘ক্রোকাবদ্ধ উক্ত সম্পত্তি এবং উক্ত সম্পত্তির ওপর নির্মিত ৫ তলা ভবন কোনোভাবে বা প্রকারে অন্যত্র হস্তান্তর, সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোনো প্রকার লেনদেন বা উক্ত সম্পত্তি এবং এ সম্পত্তির ওপর নির্মিত ভবন কোনোভাবে দায়বদ্ধ করা আইনত নিষিদ্ধ। এসময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুদক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দুদকের পিপি অ্যাডঃ খন্দকার মজিবর রহমান জানান, তদন্তকালীন সময় সাবেক ওসি শেখ আবু বকরের নামে থাকা খুলনা ও বাগেরহাটের কয়েকটি জমির দলিল, সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ির দলিল ও ঈদ উপলক্ষ্যে ছেলেকে উপহার দেয়া ৫২ লাখ টাকার গাড়িসহ প্রায় ৫১ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পায় দুদক। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের আইএফআইসি, উত্তরা ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়।