রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডিগ্রি মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এগারো হাজার। কিন্তু এই এগারো হাজার শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্যে নেই পর্যাপ্ত ক্লাব।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বির্তক ক্লাব, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ, রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী উদযাপিত হলেও আবৃত্তি সংসদ না থাকার কারণে এ অনুষ্ঠানগুলো যেন তার পূর্ণতা পাচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের বহুদিনের প্রত্যাশা একটি আবৃত্তি সংসদের।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের স্নাতক চর্তুথ বর্ষের শিক্ষার্থী তাজমিরা তামান্না তিশা বলেন, আমাদের এই ছোট্ট ক্যাম্পাসে আমরা অনেক কিছুরই কমতি অনুভব করে আসছি। তার মধ্যে একটি হলো আবৃত্তি কর্মশালা বা আবৃত্তি সংসদ। বুদ্ধির বিকাশের পাশাপাশি আমাদের মনের বিকাশও অত্যন্ত জরুরি। কবিতা পাঠ বা আবৃত্তির মাধ্যমে আমরা আমাদের এই মনের বিকাশ সম্পন্ন করতে পারি। আমি মনে করি প্রতিটি ক্যাম্পাসেই অন্যান্য ক্লাব বা সংস্থার পাশাপাশি একটি আবৃত্তি সংসদ থাকাও উচিত। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনার একঘেমিতা দুর করতে পারবে এবং সেই সাথে তাদের সাংস্কৃতিক দিকও বিকশিত হবে। বাংলা ভাষার কবিতা যে কতটা সম্মৃদ্ধ সেই সম্পর্কেও তাদের ধারণা বৃদ্ধি পাবে।
স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আশিকা জান্নাত বলেন, প্রমিত বাংলার শুদ্ধ উচ্চারণ, চর্চা, এবং ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আবৃত্তি সংসদের বিকল্প নেই। যেহেতু আমরা সবাই বাঙালি তাই আমাদের মাতৃভাষার সঠিক ব্যবহার জানা সকলের জন্য অত্যন্ত জরুরী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ বিষয়গুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আবৃত্তি সংসদ অত্যাবশকীয়।
দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল আউয়াল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অত্র কলেজে অধ্যায়ন করতেছি কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে রাজধানীর স্বনামধন্য কলেজ হওয়া সত্বেও এই কলেজে একটি আবৃত্তি সংসদ নেই। এতে করে আমরা যারা সাধারণ শিক্ষার্থী আছি তারা কবিতা চর্চা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তাই একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের চাওয়া অতি শীঘ্রই কলেজে একটি আবৃত্তি সংসদ গড়ে তোলা হোক।
আবৃত্তি সংসদ নিয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতিকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর বলেন, ক্যাম্পাসে আবৃত্তি সংসদ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আবৃত্তি সংসদের সদস্য হলে অনেক কিছু শেখা যায়। বিশেষ করে বির্তক ক্লাব, আবৃত্তি সংসদ শুদ্ধ ভাষা নিয়ে কাজ করে। শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা সকলের জন্য আবশ্যক। আবৃত্তি সংসদের সদস্যরা শুধু কবিতা নিয়ে নয়, সংস্কৃতির নিত্য নতুন বিষয় নিয়ে বিস্তৃতভাবে কাজ করে।