নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো শিক্ষার্থীদের বাস সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় বাস বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৩১টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটে প্রায় এক হাজার তিনশত শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও পরিবহন পুলে যুক্ত হয়নি একটি বাসও। শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এছাড়া প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুলে ঝুলে যাতায়াত করছেন শহর থেকে ক্যাম্পাসে।
বর্তমানে বিআরটিসির ভাড়ায় চালিত লাল বাস রয়েছে ১০টি, যার বেশিরভাগেরই ফিটনেস নেই। এছাড়া নোবিপ্রবির নিজস্ব বাস ১০টি ও ১টি মিনিবাস রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১ বছর যাবৎ ২টি বাস নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে এবং প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে ১টি মিনি বাস।
গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে নয়টায় মাইজদী থেকে আসা একটি লালবাস ক্যাম্পাস সংলগ্ন মুক্তাঞ্চল আসার পর ইঞ্জিন থেকে আকস্মিকভাবে ধোঁয়া বের হওয়া শুরু করে এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে বাস থেকে নেমে পড়ে। যাত্রীর লোড বেশি হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে জানান ড্রাইভার।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএমএস বিভাগের শিক্ষার্থী মনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী সংখ্যার বিপরীতে মাত্র গুটি কয়েক বাস রয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে ব্যাপক ভোগান্তি। বাসের অভাবে শিক্ষার্থীরা চাপাচাপি করে বাসে উঠছে, যেখানে তিল পরিমাণ জায়গা নেই। ফলে রাস্তার বেহাল দশা এবং ঠেলাঠেলিতে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পাশাপাশি বাকিদের বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় ভার্সিটিতে রওনা দিতে হচ্ছে। সোনাপুর-প্রযুক্তি রোডে উঁচুনিচু অবস্থা অনেক পুরোনো। বাসে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর কারণে ওভারলোডের সৃষ্টি হয়। ফলে উঁচুনিচু রাস্তায় ঝুঁকি এড়াতে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশের বাস থেকে নেমে হেটে রওনা দিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে বলতেই হয়, জীবন যেখানে সন্দিহান শিক্ষা সেখানে দূষ্কর। সুতরাং কোন আকস্মিক খবরের অংশ যেন না হতে হয় তাই প্রশাসনের উচিত দ্রুত বাস সংখ্যা বাড়ানো ও পরিবহন ব্যবস্থার আশু উন্নয়ন।
বিএমএস বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রুদ্র মোহাম্মদ রিফাত বলেন, প্রতিনিয়ত বাসে দাঁড়িয়ে ক্যাম্পাসে আসতে হয়। অনেক সময় দরজার সামনে ঝুলে আসতে হয় যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর বেশিরভাগ সময় বাসে দাঁড়ানোর জায়গাও পাওয়া যায় না।
পরিবহন পুলের নির্বাহী প্রকৌশলী (অটোমোবাইল) মো. সামছুদ্দোহা রাকিব বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি সাদা বাস ও একটি মিনিবাস অকেজো হয়ে পড়ে আছে। খুব শীঘ্রই টেন্ডার পাশ করে মেরামত করে শিক্ষার্থীদের জন্য বাসগুলো চালু করা হবে।’
পরিবহন পুলের উপদেষ্টা ড. কাউসার হোসেন বলেন, ‘আমরা পরিবহন পুলে বাস বাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। প্রশাসন এই বিষয়টা নজরে রেখেছে। গ্যারেজে অকেজো হয়ে পড়ে থাকা বাস সংস্কারের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। আশাকরি খুব দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।’
বিআরটিসি থেকে ভাড়া করা লাল বাসের ফিটনেসের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এই সমস্যা খুব শীঘ্রই সমাধান করবো।