জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) র্যাগিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বিরোধী ক্যাম্পেইন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় ‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট র্যাগিং অ্যান্ড সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ইন ক্যাম্পাস’ শিরোনামে এ ক্যাম্পেইন আয়োজন করেন তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্বর থেকে একটি মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। ক্যাম্পেইনে র্যাগিং ও যৌন হয়রানি সম্পর্কিত সচেতনতামূলক প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘র্যাগিংয়ের কোন ঘটনা ঘটলে ঢালাওভাবে ছাত্রলীগকে দায়ী করা হয়। কিন্তু এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও দায় রয়েছে ৷ হলে কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রভোস্টদের পাওয়া যায় না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অরুনাপল্লীতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাই। নবীন শিক্ষার্থী কারও সাথে যদি র্যাগিং-সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের মতো ঘটনা ঘটে তার পিছনে যদি ছাত্রলীগের কারও সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে অভিযোগ বক্স খোলা হবে যেখানে শিক্ষার্থীরা র্যাগিং-সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টসহ বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে পারবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুলপরী যেভাবে র্যাগিং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যেন এভাবেই প্রতিবাদ গড়ে তোলে। সবাই যেন ফুলপরী হয়ে উঠে।’
সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো র্যাগিং-সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের পক্ষে নয়৷ বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে র্যাগিং ও সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটে থাকে সেটার বিরুদ্ধে আজ আমরা দাঁড়িয়েছি। র্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় যদি ছাত্রলীগের কর্মীরাও যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে আমরা জিরো-টলারেন্স নীতি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। গেস্টরুম-গণরুম কালচার ছাত্রলীগ কখনো শেখায় না। যারা র্যাগিং করে ছাত্রলীগে তাদের ঠাই নেই। আমি ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীর কাছে আহ্বান জানাবো নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে বড় ভাই বা বড় বোন সুলভ আচরণ করার জন্য তাদের যেকোন সমস্যায় বা প্রয়োজনে পাশে থাকার জন্য।
সম্প্রতি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতন ও র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাবাসসুম ইসলামের নেতৃত্বে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নির্যাতন করা হয়। পরে ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে বিচার চান।
এর প্রেক্ষিতে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতন ও র্যাগিংয়ের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বাবিদ্যালয় ছাত্রলীগ র্যাগিং বিরোধী এ কর্মসূচি গ্রহন করে।