পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অংশগ্রহণ না করা নিয়ে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এসময় গুচ্ছে অংশগ্রহণ না করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তিপরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তারা।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪ টায় অনুষদ ভবনের নিচতলায় শিক্ষক সমিতির অফিসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী সাংবাদিক সংগঠন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
এসময় সাংবাদিকদের লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, গুচ্ছের এ ত্রুটিগুলোর কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির গত সাধারণ সভায় ডিসিশন ছিলো যে গুচ্ছের এই ত্রুটিগুলো যদি না কমে তাহলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা ভাবে পরীক্ষা নিবে। এর আলোকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারারের সাথে একাধিকবার কথা বলেছি লিখিতও দিয়েছি যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এ ব্যবস্থা গুলো নেওয়ার ব্যাপারে আলাদা ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী একটি সর্বোচ্চ বডি রয়েছে সেখানে এক্সিকিউটিভ অফিসার রয়েছে, ডিন রয়েছে। শিক্ষক সমিতির শুধু বলতে পারে এই এই কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপাচার্য স্যার আমাদের বলেছেন শিক্ষকরা যেভাবে চাইবেন সেভাবেই সবকিছু হবে এবং উনি বলেছেন উনি একাডেমিক বডির সাথে কথা বলবেন।
সব মিলিয়ে প্রথমে তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলো সেখানে মনে হয়েছিলো এটি ভালো জিনিস কিন্তু প্রথম বারেই কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছিলো। এই ত্রুটির কারণে আমরা গতবার সাধারণ সভা করে বলেছিলাম আমরা গুচ্ছে আর যাবো না। পরবর্তীতে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে বলা হয়েছে যে প্রথম বারতো এইজন্য বিভিন্নরকম ত্রুটি দেখা দিয়েছে। কিছু সিস্টেম ডেভেলপ করলে আর এইরকম ত্রুটি থাকবে না। কিন্তু গুচ্ছে যাওয়ার পর সিস্টেমে আগের চেয়ে আরও বেশি ঝামেলা দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ গতবারের প্রেক্ষাপট আর এইবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। গতবারতো বলার একটা রাইট ছিলো যে প্রথমবার এই জন্য গুছিয়ে উঠা যায়নি। কিন্তু দ্বিতীয়বার গোছানোর পর আরও অবস্থা খারাপ হলো। অর্থাৎ এইবার আর বলার জায়গা নাই। তৃতীয় বারে এর চেয়েও বেশি হতে পারে।
এসময় তারা আরো বলেন, গুচ্ছের কারণে আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভর্তির পূর্বেই নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। পরবর্তীতে কিন্তু একটি সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়ছে। যে জায়গাটায় অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে দুই সেমিস্টার শেষ হয়ে যাচ্ছে সেখানে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু করতেই পারছে না। এই বিষয়টারো নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এই বিষয়গুলোই আমরা এডজাস্ট করেছি যে এই এই কারণে আমরা এখান থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছি। আমরা গুচ্ছের বিরুদ্ধে না আমরা এটা বলছি যে ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত যে প্লাটফর্মটা দরকার সেটা আগে তৈরি করা হোক। আমরা চাচ্ছি না শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো এক্সপেরিমেন্ট করা। আমরা বলতে চাচ্ছি আগে ভালো কিছুর প্রস্তুতি হোক তারপর ভেবে দেখা যাক।
এর আগে গুচ্ছ কমিটির সভায় আহবায়ক ও শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদউদ্দীন ইবি সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে যাওয়ার কথা বলেন। এর প্রেক্ষিতে ইবি শিক্ষক সমিতি তাদের অবস্থান নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গুচ্ছের বিপক্ষে নই তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি কমাতে এই দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে হবে। এইজন্য আমি মনে করি আমাদের গুচ্ছে যাওয়া সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রাকিব, সাধারণ সম্পাদক তাসনিমুল হাসান প্রান্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহান সিদ্দিকী, কার্যনির্বাহী সদস্য সামি, যায়িদ, ইমন, মং প্রমুখ।