জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যত্রযত্র জমে থাকা ময়লার স্তুপ, কনস্ট্রাকশন ওয়েস্টেজ, অপ্রোজনীয় আসবাব ও সৌন্দর্য বিনষ্টকারী ব্যানার পোস্টার। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের জন্য টেন্ডার প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব থাকে কনস্ট্রাকশন এর পর যেসকল ওয়েস্টেজ বের হবে তা অপসারণ করে পরিচ্ছন্ন দেখিয়ে তাদের বিল নেওয়ার। কিন্তু দায়িত্বশীলদের অগোচরে তা পরিষ্কার না করেই বিন নিয়ে চলে যায় কোম্পানীগুলো। সে ময়লা জমে থাকে ক্যাম্পাসে। প্রায় ২০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে চলছে দারুণ সাফল্যের পথে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যদি শিক্ষার্থীদের আশানুরুপ না হয় আর মানসিক তৃপ্তির অভাব থেকে যায় তবে বিকাশ আর শিক্ষার অগ্রগতি কেমন হবে তা ভীষণ সন্দিহান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামমাত্র বোটানিক্যাল গার্ডেনের একপাশ বালু, পাটকেল আর নানা রকম আবর্জনার স্তুপ জমে আছে দীর্ঘদিন ধরে। যেহেতু এসব ময়লা জমা তাই সেখানে এখন স্থান পায় কলা ভবন ও সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের ময়লা আবর্জনাও।
বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগের সামনে জমে আছে আরো এক স্তুপ ময়লা।
এ বিষয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নির্দেশনা দানকারী ও সংস্থাপন এর ডেপুটি রেজিস্ট্রার জনাম মো. ইসমাইল হোসেন এর সাথে কথা বললে জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট, হল উদ্বোধনের পর যে কয়জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের স্থানে নতুন নিয়োগ হয় নি। কর্মী সংকটের পাশা পাশি ময়না ফেলার পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সিটি করপোরেশন এর ময়লা ফেলা হয় বাংলা বাজার মোড়ে যেখানে ময়লা ফেলতে গিয়েও অসহযোগিতার স্বীকার হতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেনগুলোর ভেতর দিয়ে গ্যাস ও পানির লাইন নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পরিষ্কার করার ব্যবস্থাও। এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা পরবর্তীতে আর কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয় নি।
পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুল কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে এ খাতে যে পরিমান অর্থ বরাদ্দ তা যথেষ্ট নয়। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কাজ করছে। তবে লোকবল সংকট তে আছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারী বর্জ্য কিংবা কনস্ট্রাকশন ওয়েস্ট সড়ানোর দায়িত্ব তো পরিবেশ কমিটির না। যারা টেন্ডার দেন ও কাজ বুঝে নেন তারাই এটি দেখবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরে থেকে জানা যায় বাজেট কমানো হয় নি। তবে মেজরিটির ভিত্তিতে কাজে খরচ কমানোর নির্দেশনা আছে।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের মূল বাজেট বই থেকে জানা যায় এবারের বাজে হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা যেখানে আর ২ লক্ষ টাকা প্রয়োজন যা ঘাটতি হিসেবে দেখানে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চীফ ইঞ্জিনিয়ার প্রকৌশলী মো: হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, “অকশনের মাধ্যমে যে সকল জিনিস বিক্রি হবে তা নিয়ে গেলে পরে আমরা এসব পরিষ্কার করে দেবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে যেখানে এসব বর্জ্য আছে সেগুলো থেকে বিক্রয় যোগ্য জিনিস আছে বলেই তা জমে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ ও ঘাটতি পূরণের জন্য আমরা চেষ্টা করে চলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও স্বীকার করেন তিনি।
তথ্য অনুযায়ী জানা যায় অকশন এর কাজ শেষ হয়েছে। অথচ এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিভিন্ন স্থানে জমে আছে ময়লার স্তুপ। এ বিষয়ে একে অপরের দিকে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করেই পেরিয়ে যাচ্ছে দিন অপরিচ্ছন্নই থাকছে ক্যাম্পাস।