কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত তারিক মন্ডল (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রোববার (২৬ মে) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে গত সোমবার (২১ মে) বিকেল ৪টার দিকে জয়নাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নিহত তারিক মন্ডল কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জয়নাবাদ গ্রামের মন্ডলপাড়ার গোলাম মোস্তফার ছেলে। তিনি আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মান্নান খানের কর্মী ও সমর্থক। মান্নান খান ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। মান্নান খান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তিনবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। অভিযুক্তরা পরাজিত মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী গোলাম জিলানী পিটারের সমর্থক ও কর্মী। তিনি সাবেক এমপি বেগম সুলতানা তরুণের ছেলে। তার দাদা গোলাম কিবরিয়াও সংসদ সদস্য ছিলেন। এ বিষয়ে আহত নাজিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মান্নান খানের লোক। আর যারা সন্ত্রাসী হামলা করে আমাদের গুরুতর আহত করেছেন, তারিককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছেন তারা পিটারের লোক। ভোটকেন্দ্রের সামনে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল। এ সময় তাদের শান্ত হতে বলেন আমাদের লোকজন। বিশৃঙ্খলা বন্ধ করতে বলার কারণে প্রতিপক্ষের লাল, মধু, আজিজুলসহ প্রায় ১০-১৫ জন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের লোকজনদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাদেরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও মারপিট করে জখম করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তারিক মারা গেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। চাপড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপন মন্ডল বলেন, আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মান্নান খানের কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গুরুতর আহত তারিকের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ১০-১৫ জন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম আকিব। তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় তারিক মারা গেছেন। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।