নরসিংদীর রায়পুরায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়াকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা, অন্যটি দ্রুত বিচার আইনে করা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে মামলা দুটি করা হয়।
হত্যা মামলার বাদী নিহত সুমন মিয়ার বাবা উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন। এতে ২৬ জনের নামে উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। দ্রুত বিচার আইনে করা মামলার বাদী সংসদ সদস্য রাজিউদ্দীন আহমেদের ছেলে রাজীব আহমেদ। এতে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুমন মিয়ার প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান ওরফে রুবেলকে।
নিহত সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে। বিয়ের ১৬ বছর পর তার স্ত্রী লিজা আক্তারের গর্ভে যমজ বাচ্চা এসেছে, রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। অনাগত দুই সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না নিহত সুমন মিয়া।
নিহত সুমনের স্বজনরা জানান, তৃতীয় ধাপে রায়পুরা উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বুধবার দুপুর ১২টার দিকে চরাঞ্চল পাড়াতলী ইউনিয়নে গণসংযোগে যায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া। তাদের গাড়িবহর ইউনিয়নের মামদেরকান্দীতে পৌঁছলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেলের নেতৃত্বে সমর্থকরা হামলা চালায়। এতে সে আহত হয়ে দৌড়ে পালিয়ে স্থানীয় বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়। সন্ধ্যা ৬টায় তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যা মামলার বাদী ও নিহত সুমন মিয়ার বাবা নাসির উদ্দীন বলেন, ছেলেকে হত্যার ঘটনায় মামলা করেছি। এখন দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার দেখতে চাই। শুধু রাজনৈতিক কারণে আমার ছেলেকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বিচার দেখে যেতে চাই।
দ্রুত বিচার আইনে করা মামলার বাদী সংসদপুত্র রাজীব আহমেদ বলেন, পাড়াতলীতে সুমনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আবিদ হাসান রুবেলের নেতৃত্বে আসামিরা উপজেলা অডিটরিয়ামে এসে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছি। সব আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ মামলা দুটির বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, দুটি লিখিত অভিযোগই মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।