মানিকগঞ্জে সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটের কর্তৃপক্ষের ভূলে ভৌতিক বিষয়ে অকৃতকার্য আসায় শিক্ষার্থীদের জীবনে অন্ধকারের কালো ছায়া নেমে এসেছে । এর প্রতিকার চাইতে শিক্ষকের কাছে গেলে করছেন অসদাচরণ।
রবিবার (১২ মে) দুপুরে এসএসসি ও ভোকেশনাল পরিক্ষার ফলাফল ঘোষণার পরে বিষয়টি নজরে এলে মানিকগঞ্জ টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।
জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয় তবে শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়া হয় পরীক্ষার ৫ দিন আগে। প্রবেশপত্রে ১টি অতিরিক্ত বিষয় দেখা যায়, যা বোর্ড কর্তৃক ভুল বলে বিবেচিত হলেও কোনো প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই শিক্ষার্থীদের মাঝে নির্দেশনা ছাড়া তুলে দেওয়া হয় ।
ফলাফল ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা দেখতে পান অতিরিক্ত একটি বিষয়ে অকৃতকার্য কিন্ত তারা কেউই এ বিষয়ে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি এবং তাদের কারিকুলামে এই বিষয়টি ছিলো না।
প্রবেশ পত্রে এই বিষয়ের কোড নাম্বার থাকলেও শিক্ষকেরা বলছেন তাদের অজান্তেই এমনটি হয়েছে। বিষয়টি তারা খেয়াল করেনি বলে জানান এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করেন।
শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট শীটে দেখা যায়, ম্যাথম্যাটিকস নামের অতিরিক্ত বিষয়ে অকৃতকার্য দেখাচ্ছে যার কোড হলো ৮১২৩।
একই ট্রেডে দুইটি ম্যাথম্যাটিকস বিষয় আসে কিভাবে প্রশ্ন রাখে শিক্ষার্থীদের অভিবাবক ও সচেতন মহল।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোঃ আতিক হাসান জানান, স্যারদের ভুলের কারণে আমাদের এডমিট কার্ডে একটি অতিরিক্ত সাবজেক্ট রয়েছে। এটা আমরা বুঝতে পারিনি কারণ আগে কখনো এমন এডমিট কার্ড পাইনি। ফলাফল ঘোষণার পর জানতে পারলাম এডমিট কার্ডে অতিরিক্ত বিষয় রয়েছে এবং অকৃতকার্য আসছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা ৩ জন স্যারদের সাথে যোগাযোগ করি। এসময় শরীফুর স্যার আমাদের জানায় বোর্ডে গিয়ে সমাধান করতে হবে এজন্য কিছু টাকা খরচ হবে।
টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ জানান, যেই সাবজেক্টে আমাদের ফেইল আসছে এই বিষয়ে আমাদের কোনো ট্রেড নেই।
সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, শরীফ স্যার আমাদের জানায় বোর্ডে গিয়ে সমাধান করতে হবে এজন্য কিছু টাকা খরচ হবে। যদি ৩ হাজার খরচ হয়, তোমরা কতজন আছো দেখো! যদি ৩ জন থাকো, তাহলে প্রত্যেকের ১ হাজার করে টাকা দিতে হবে।
ভুক্তভোগী আরেক ছাত্র আলিফ বলেন, আমার দুই সাবজেক্টে পাশ আসছে!দুইটা একই সাবজেক্ট এবং দুইটাই ম্যাথমেটিক্স । যে সাবজেক্টে আমি পরীক্ষাই দেই নাই এবং কারিকুলামেও নাই। সেই সাবজেক্টে আমি পাশ করেছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক লাইলী বলেন, আমি স্যারদের কাছে আসছি বিষয়টা নিয়ে একটা সমাধানের জন্য । কিন্তু তারা সকাল থেকে আমাদের কোনো জবাব না দিয়ে, বসিয়ে রেখেছে। সর্বশেষ যখন গিয়েছি তখন আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে, ধমক দিয়ে বের হয়ে যেতে বলেন।
শিউলি নামের এক অভিভাবক জানায়, অংক দুইটা সাবজেক্ট দেখাইতেছে রেজাল্টে,তাও আবার একটাই পাশ,একটাই ফেল । আমি তো বুঝি না এত কিছু, তাই উনাদের কাছে আসছি। সকাল থেকে বসে আছি,ওনারা আমাদের বিষয়টা গুরুত্বই দিচ্ছে না ।
এ বিষয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর শরীফুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলেছি বোর্ডে যেতে খরচ হবে । আমি ছাত্রছাত্রী টাকা নিয়ে কি করবো? আমার ঢাকায় পাঁচতলা বিল্ডিং আছে। আমি উল্টা আরো ছাত্রদের সাহায্য করি।বিশ্বাস না হলে! স্যার ম্যাডামদের কাছে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ আমিনুল হক বলেন, এইটা বোর্ডের ভুল আমাদের কোনো ভুল না।
এডমিট কার্ড দেওয়ার সময় বিষয়গুলো লক্ষ্য করে দেওয়া হলো না কেনো? জিজ্ঞেস করলে তিনি আর কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।