৫৫কোটি২৬লাখ টাকা ব্যয়ে দৃস্টি নন্দন ৮ তলা বিশিষ্ট ঝালকাঠির চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে এগারটায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু (এম.পি) নতুন এই ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ৮তলা এই ভবনে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে এজলাস কক্ষ সংকটের সমাধানের পাশাপাশি বিচারকার্যে গতি বাড়বে বলে মনে করেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঝালকাঠির সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়ালিউল ইসলাম, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.পারভেজ শাহরিয়ার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ হামিদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান রসুল,উপজেলা ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানায়, ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত ভবনের দক্ষিণ পাশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সদরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১.৭৫ একর জমির ওপর ১২ তলা ভিত বিশিষ্ট ৮তলা চিফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ করে গণপূর্ত বিভাগ। ২০১৮ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর শিল্প-মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এম.পি ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এবং নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম বলেন, ৮ তলা ভবনটি উদ্বোধন হওয়ায় বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের কষ্ট লাঘব হবে, এজলাস সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়বে বিচারকাজের গতি।
ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান রসুল বলেন, প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর ২০০৭ সালের ০১ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। পৃথক ভবন না হওয়ায় এজলাস সংকটের কারণে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা পালা করে বিচার কাজ চালাতেন। বর্তমান সরকার বিচারক, বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের কথা চিন্তা করে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ভবন নির্মাণের কাজে হাত দেয় সরকার। গত ১৫ বছরে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠি আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীর সংখ্যাও বেড়েছে। এতোদিন ভবন ও এজলাশের সংকটের কারণে মামলার কাজে বিলম্ব হতো। নতুন এই ভবনটির ব্যবহার শুরু হলে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের স্থান সংকট সমাধানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে চলমান মামলা জটের নিষ্পত্তি হবে।
ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ সূত্র আরও জানায় ৫৫ কোটি ২৬ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন ভবনটিতে রয়েছে আধুনিক নানা রকম সুযোগ সুবিধা। বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য এখানে রয়েছে ২২টি এজলাশ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৫০০ কেবি সাবস্টেশন, অত্যাধুনিক ৩টি লিফট, অত্যাধুনিক লাইব্রেরী, কনফারেন্স রুম, ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার, নামাজের কক্ষ এবং বিচারকদের খাস কামরা। এছাড়াও এখানে রয়েছে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক হাজতখানাসহ প্রয়োজনীয় অফিসরুম, অপেক্ষমান কক্ষ এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।