জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছে থাকবে কিনা সে বিষয়ে বিশেষ সভা আহ্বান করা হয়েছে। আগামী বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এর সভাপতিত্বে তাঁর সভা কক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল-এর ৬৪-তম সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ এই সভার দিন-সময় নির্ধারণ করা হয়। এর আগে দুইবার তারিখ দিয়েও পরিবর্তন করা আহয় সেই তারিখ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক।
২০০৫ সাথে অনুমোদন পেয়ে ১৮ বছর পার করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্যের খাতায় বারংবার তার অর্জনকে তুলে ধরেছে বিশ্ব দরবারে। খ্যাতনামা শিক্ষক শিক্ষার্থী আর তাদের প্রাপ্তির গৌরবোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে দিয়েছে প্রথম সারিতে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পরিচলনার জন্য মূল দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে।
এতে করে নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি বাদ দিয়ে জবি সহ ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলত পরীক্ষা নেওয়ার যে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি তাতে যুক্ত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আসলেও গৌরবের সাথে এখন আর শিক্ষার্থীদের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠে আসে না। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না লিখে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখ করেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের যে স্বপ্ন ছিলো তা এখন আর নেই বললেই চলে।গুচ্ছ পরীক্ষা দিয়ে কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেই সাড়া গেলো। গুচ্ছে থেকে গত দুইবছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে পড়তে হয়েছে নানা সমালোচনার মুখে, পোহাতে হয়েছে কত বিশৃঙ্খলা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা এতে ক্ষুব্ধ আর তাদের মতামত যেন জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়ায় অক্ষম থাকায় গুচ্ছতে ভরসা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সিনিয়র শিক্ষকরাও নেতিবাচক মন্তব্য করছেন গুচ্ছ নিয়ে। তারা বলছেন তোষামোদি করে কিংবা সরকারি সিদ্ধান্তে না বলার সাহস না থাকায় গুচ্ছ থেকে বের হতে পারছে না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে কয়েকটি বিজ্ঞপ্তিতে গুচ্ছ না থাকার জন্য তীব্রভাবে তাদের প্রতিবাদ জানিছেন।
শিক্ষক সমিতির মনে করছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র ধারা ও মান বজায় রাখতে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন প্রথম লক্ষ্য হওয়া দরকার।
এছাড়া জবি নীলদলের দুই অংশ, জবি স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ ও গুচ্ছের বিপক্ষে অবস্থান করছে এবং এ ইস্যুতে শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিচ্ছে।