আর মাত্র একদিন পরই (১৫ ডিসেম্বর) যুব মহিলা লীগের সম্মেলন। ফলে সংগঠনটির শীর্ষ দুই পদ ও কমিটিতে স্থান পেতে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নেত্রীরা। কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসা ও অফিসে গিয়ে সাক্ষাৎ করছেন নেত্রীরা। এমনকি ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় এবং গুলিস্থানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন তারা।
জানা গেছে, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। প্রায় অর্ধেক পদেই পরিবর্তন আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল দায়িত্বে আছেন ২০০৪ সালের ৫ মার্চ থেকে। এরপর ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ পরবর্তী সম্মেলনেও এই দুজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনঃনির্বাচিত হন। সবমিলে গত ১৮ বছর ধরে তারা দুজন এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
যুব মহিলা লীগের গঠনতন্ত্রে কোনো বয়সসীমা উল্লেখ নেই। তারপরও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। অনেকের আক্ষেপও রয়েছে।
যুব মহিলা লীগের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তারের বয়স ৫৫ বছর। সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের বয়স ৫০। এছাড়া অন্যান্য পদেও পঞ্চাশোর্ধ ও পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই নেত্রীরা রয়েছেন। এবার সভাপতি পদ থেকে বিদায় নিতে পারেন নাজমা আক্তার। তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।
জানতে চাইলে নাজমা আক্তার বলেন, মাননীয় নেত্রী আমাকে যেখানে কাজে লাগাবেন সেখানেই যাব।
তবে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, যুব মহিলা লীগের সভাপতি হতে পারেন ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন।
অবশ্য যুব মহিলা লীগের শীর্ষ পদে পরিবর্তনের কথা আগেই জানিয়েছিলেন বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার। পাঁচ মাস আগে তিনি বলেছিলেন, প্রায় অর্ধেক পদেই পরিবর্তন আসতে পারে।
জানা গেছে, এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন-পুরনো এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রীদের নিয়ে কমিটি গঠিত হতে পারে।
সূত্র জানিয়েছে, সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সভাপতি পদের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। দলের ভেতরে ও বাইরে আলোচনা, যুব মহিলা লীগের পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছেন অপু উকিল। এছাড়া সংগঠনের কয়েকজন সহ-সভাপতিও সভাপতির পদ পাওয়ার দাবি নিয়ে এগোচ্ছেন।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক হতে চান কয়েকজন সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সবচেয়ে আলোচনায় আছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি ও আফরোজা মনসুর লিপি।
করোনাকালে আওয়ামী লীগের যেসব নেত্রী সক্রিয় ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ডেইজি। অপর দিকে আফরোজা মনসুর লিপি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন বলে শোনা যায়।
এছাড়া বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে শাহনাজ পারভীন ডলি, শারমীন আক্তার নিপা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি ও মাহফুজা রিনাও সাধারণ সম্পাদক হতে চান।
যুব মহিলা লীগের নেত্রীরা শেষ মুহূর্তে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে নারাজ। তবে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানিয়েছেন, এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন-পুরনো মিলিয়ে ভালো একটি কমিটি আসুক- এটাই তাদের প্রত্যাশা। আর যারা মাঠের রাজনীতি করেন, সক্রিয় ও ত্যাগী তাদের মূল্যায়ন হবে বলেও আশা করেছেন তারা। তবে কমিটিতে জায়গা পেতে অনেকে তদবিরে ব্যস্ত বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন।