বিএনপি নিজেদের ইমেজ সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। গতকাল রোববার ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং গুণিজন সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এই আলোচনা সভা ও গুণিজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করে দৈনিক ভোরের আকাশ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি আগুন-পেট্রোল সন্ত্রাস করে ও রাস্তাঘাট ধ্বংস করে যে ইমেজ সংকটে পড়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নতুন করে আবার অসাংবিধান পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার অথবা সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় যারা ক্ষমতায় আছে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এতে তারা গণদুশমনে পরিণত হতে পারে। বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনবিপরীতমুখী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে এক সময় আপনাদের অস্তিত্ব সংকট দেখা দিতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। মনে রাখবেন রাজনীতিতে ভুল করলে মানুষ কিন্তু সেখানে চিরদিন থাকে না। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে উল্টে দেওয়ার প্রক্রিয়ার কুশীলব ও নাটেরগুরু ছিলন। তাদের দলের (বিএনপি) কাছ থেকে, তাদের জোটের কাছ থেকে এই বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের লম্ফঝম্ফ আমাদের দেখতে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শানিত করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের ভেতরে কিছু কিছু বিভাজনের ফলে স্বাধীনতা বিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে সাহস পেয়েছে। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর উত্তরসুরি এবং তার পুরো দলকে ধ্বংস করার মতো গ্রেনেড হামলা করতে সাহস পেয়েছিল। বিজয়ের মাসে আবার পরাজিতরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত মাড়িয়ে তাদেরকে আমরা এই বাংলাদেশে আবার চাঁদতারার পতাকা উড়াবার সুযোগ দেব না, এটা আমাদের প্রত্যয়। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য বিষয় উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলতে গেলে বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টি বাংলাদেশের কথা বলতে হয়। বাংলাদেশের কথা বলতে গেছে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বলা যায় না। ফলে এই দুটি শব্দ পারস্পরিক অবিচ্ছেদ্য। দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর কারণ তিনি (হাসিনা) মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেছেন। করোনার সময় অনেকে ভয়ংকর অবস্থার আশঙ্কা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার বহুমুখী নেতৃত্বের কারণে দেশে কেউ না খেয়ে, বিনা চিকিৎসায় মরেনি। দেশের একটি মানুষ বিবস্ত্র অবস্থায় ঘোরেনি। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একজন ছাত্র টাকার অভাবে ঝড়ে পড়েনি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমাদের মাথায় রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র শেষ আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা। তাকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ থাকবে না। ফলে তার নেতৃত্বে ৭১ এর চেতনা নিয়ে আমরা যদি এগিয়ে যেতে পারি, তাহলেই ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। দৈনিক ভোরের আকাশের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার এবং সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। এছড়া উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, রোকেয়া প্রাচী, কৃষক লীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, অভিনেত্রী তারিন জাহান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বেগম রোকেয়া পদক-২০২২ পাওয়া অধ্যাপক কামরুন নাহার বেগম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও নাট্য ব্যক্তিত্ব লাকী ইনামের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
নবচেতনা /এমএআর