বাঁশের পালা আর তাঁবু টানিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঘর। ঐ ঘরে জটলা বেঁধে বসে আছেন নানা বয়সী লোকজন। এর মধ্যে কারো কাছে রয়েছে ছোট চাকু, কাঠের টুকরো আবার কারো হাতে কলকি। জটলা বাধা লোকজন বসে বসে গাঁজার পাতা কাঠের উপর রেখে চাকু দিয়ে কুটছে। কেউবা হাতে তালুতে রেখে বৃদ্ধাঙ্গুলের সাহায্যে মলছেন। আবার অনেকে কলকির মধ্যে গাঁজা রেখে শান্তিতে সেবন করছেন। তবে দূর থেকে চোখের দৃষ্টি পড়লে দেখা যায় ওইসব ঘর থেকে ধোঁয়া উঠছে। তবে পা বেড়ালেই যেন নাকে আসছে গাঁজার গন্ধ। অনেকেই নাক চেপে যাতায়ত করছেন।
এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের খড়মপুর এলাকায়। এখানে শাহ সৈয়দ আহাম্মদ গেছুদারাজ (রহ.) ওরফে শাহ পীর কল্লা শহীদের মাজারে সাত দিনব্যাপী বার্ষিক ওরস শুরু হয়েছে। আর ওরস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে হাজার হাজার ভক্ত আশেকান খড়মপুর এলাকায় সমবেত হচ্ছেন। মাজার সংলগ্ন স্থানে আস্তানা করে প্রকাশ্যে দিবালোকে মাদক সেবন ও বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, বার্ষিক ওরসকে কেন্দ্র করে মেলা বসছে। এই মেলায় বসেছে বিভিন্ন রকমের দোকান। মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য লোকজন আসছেন। মাদকের ভয়াল থাবায় নানা বয়সী লোকজন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছেন।
গত শনিবার দুপুরে দেখা যায়, মাজারটির পশ্চিম দিকে পুকুরের পাড় সংলগ্ন মাঠে এবং উত্তর দিকে কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় মাদকের বেশ কয়েকটি আস্তানা ঘরে উঠেছে। মাজারের আশপাশে অবাধে চলছে মাদক সেবন ও বিক্রি। প্রকাশ্যে গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক এখানে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে অসামাজিক কাজও।
স্থানীয়রা জানান, এ মাজারের চারদিকে মাদকের আস্তানা বসায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি তৎপর থাকতো তাহলে এ অস্থা তৈরি হতো না।
মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খাদেম (মিন্টু) বলেন, মাজার এলাকার ভেতরে গাঁজা সেবন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষেধ। মাজারের উত্তর ও পশ্চিম দিকে কিছু আসর আমাদের নজরে এসেছে যা এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। মাজার ও তার আশপাশ মাদক মুক্ত রাখতে যা যা করা দরকার অবশ্যই তা করা হবে।
আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এখানে মাদকের আস্তানা রয়েছে বিষয়টি জানা ছিল না। মাদক বিক্রি ও সেবনের বিরুদ্ধে প্রশাসন খুবই তৎপর রয়েছে।