বিয়ে হওয়ার ঠিক ৬ দিন পর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস। ভালবাসা দিবসে স্বামী তার নববধূর গলায় বকুলের মালা দেওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও, ঠিক একদিন আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রীর গলায় দিলেন গরু জবাইয়ের ছুরি। ভালবাসা দিবসে স্বামী পাওয়ার কথা ছিল লাল গোলাপের ভালবাসা কিংবা তার নববধূর মেহেদী রাঙ্গা হাতের ছোঁয়া, অতচ স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার দায়ে স্বামীর হাতে পড়েছে পুলিশের হাতকড়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সদ্য বিয়ে করা তাছলিমা আক্তার(২২) নামের নববধূকে গলা কেটে চাঞ্চল্যকর হত্যা করা স্বামী হামিদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (১৪ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার দক্ষিন ইউনিয়নের বড়মুড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া আসামী হামিদুল উপজেলার দক্ষিন ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ ভূইয়ার ছেলে। উল্লেখ্যঃ ৭/৮ মাস পূর্বে ইসলামিক রীতিনীতি অনুযায়ী পারিবারিকভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাছলিমা ও সৌদি প্রবাসী হামিদুলের বিবাহ হয়। জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে তাছলিমার স্বামী হামিদুল সৌদি আরব হতে বাংলাদেশে আসে। এবং ৯ফেব্রুয়ারি শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তাসলিমাকে হামিদুলের বাড়ীতে উঠাইয়া আনে। শনিবার দিন পুনরায় বউকে নিয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে আবার রোববারে হীরাপুর নিজ বাড়িতে চলে আসে। এই কয়েক দিনেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টিকটকের বিষয় নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এরই পেক্ষিতে স্বামী হামিদুল স্ত্রী তাছলিমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা আনুমানিক ২টার দিকে তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে। এবং তার ভাই হানিফ ভূঁইয়াকেও চুরি দ্বারা আঘাত করে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত তাসলিমার ভাই আব্দুল কুদ্দুস মঙ্গলবার রাতেই বাদী হয়ে ভগ্নিপতী আব্দুল হামিদকে প্রধান আসামি করে আখাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আখাউড়া থানায় উপরোক্ত হত্যা মামলা রুজু করা হয়। হত্যা মামলা রুজু হওয়ার পর হইতে পলাতক আসামী আব্দুল হামিদুলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে আখাউড়া থানার পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করে। এবং বুধবার দুপুরে ভারত সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় হামিদুলকে গ্রেফতার করা হয়।জানতে চাইলে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) নূরে আলম হামিদুলের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক খোলাকাগজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই এরশাদ মিয়া, এসআই মোবারক আলম, এসআই আনিসুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সসহ একাধিক চৌকস টিম বেলা ১২টা ১০ মিনিটের দিকে আখাউড়া উপজেলার বড়মুড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আখাউড়া থানা পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সহায়তায় আসামী হামিদুলকে গ্রেফতার করা হয়। এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হামিদুল জানায়, তার স্ত্রী টিকটকে আসক্ত ছিল, হামিদুলের সন্দেহ তার স্ত্রী তাছলিমা ফোনে কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু স্ত্রীর মোবাইল ফোন চাইলে স্বামীর হাতে মোবাইল দিতে নারাজ ছিলেন তার স্ত্রী তাছলিমা। এক পর্যায়ে হামিদুল স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বাজারে গিয়ে গরু জবাই করার ছুরি কিনে এনে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, হামিদুলকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিজ্ঞ আদালতে সপর্দ করা হয়েছে।