“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ এবং প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত দীর্ঘদিনের পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নোয়াখালি এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে আবুল খায়েরসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধী রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা অপহরণ, নৃশংস হত্যাকান্ডসহ মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধাপরাধী আবুল খায়েরসহ অন্যান্য সশস্ত্র রাজাকার ও পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে নোয়াখালি জেলার কোম্পানিগঞ্জ থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বুদ্ধিজীবী ডঃ রমেশ চন্দ্র সেনকে হত্যাসহ স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা সাতজনসহ মোট ১০ জন ব্যক্তিকে হত্যা করে। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কর্তৃক একটি মামলা যার কমপ্লেইন্ট রেজিঃ ক্রমিক-৮৭, তারিখ-১২/১১/২০১৭ ইং, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) মিস. মামলা নং-০৪/২০২১ রুজু হয়। পরবর্তীতে গত ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখ যুদ্ধাপরাধী আবুল খায়ের এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে আসামী আবুল খায়ের দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত যুদ্ধাপরাধী আবুল খায়েরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক দুপুর ১৩:১০ ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার উত্তরা-পশ্চিম থানাধীন আহালিয়ার মাষ্টার গলি এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে উল্লেখিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) কর্তৃক ইস্যুকৃত গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত যুদ্ধাপরাধী মোঃ আবুল খায়ের (৭০), পিতা-মৃত দানা মিয়া, সাং-চর ফকিরা, থানা-কোম্পানিগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালি’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামী উল্লেখিত ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় আসামী আবুল খায়ের গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর হতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপন করে ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।