যশোরে লাইনচ্যুত তেলবাহী ট্যাংকার সরিয়ে নেওয়ার পর খুলনার সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে সিঙ্গিয়া রেলওয়ে স্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তেলবাহী ট্যাংকার সরিয়ে নেওয়ার পর বেলা ১১টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। দুর্ঘটনার কারণে সাত ঘণ্টা বন্ধ ছিল রেল যোগাযোগ। তবে ভোর থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে অংশ না নিলেও পড়ে যাওয়া তেল সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। নারী, পুরুষ, শিশুরা পড়া তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। রেলওয়ে যশোরের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে খুলনা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন (রিলিফ ট্রেন) এসে কাজ শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত তেলবাহী ট্যাংকার সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ১১টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে যশোরের সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের কাছে বসুন্দিয়ার বানিয়ারগাতি এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার পর থেকে খুলনার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাংকারে ৪২ টন ডিজেল ছিল বলে দাবি করেছেন উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রেলওয়ের কর্মীরা। রেললাইনে পাশে পরিত্যক্ত নিচু জমিতে ট্যাংকার পড়ে যাওয়ায় তেল গড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন মাটিতে পড়া তেল কুড়িয়ে নিয়ে যায়। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সি মানুষ তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনে তেল লুট হয়ে গেলেও তেমন কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, দুর্ঘটনার শিকার ট্যাংকারের তেল সব পড়ে গেছে। কাদামাটির ভিতর থেকে তারা সংগ্রহ করছেন। এই তেল তারা ব্যবহার করবেন। উদ্বৃত্ত তেল বাইরে বিক্রি করবেন। সিঙ্গিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, সবাই পড়ে থাকা তেল নিয়ে যাচ্ছে, আমিও নিচ্ছি। আমরা না নিলে তো সবই নষ্ট হয়ে যাবে। সুফিয়া বেগম নামে এক নারী বলেন, ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি এলাকার মানুষ সবাই তেল নিয়ে যাচ্ছে। তাদের দেখাদেখি আমিও নিচ্ছি। যতটুকু কাজে লাগানো যায় দেখি। শহিদুল নামে এক ব্যক্তি বলেন, সকাল থেকে তেল কুড়াচ্ছি, ১০ লিটারের মতো পেয়েছি। বাড়িতে ব্যবহার করব। বাকিটা কম টাকায় হলেও বিক্রি করতে পারব। আমরা না নিলে সবই মাটিতে মিশে নষ্ট হয়ে যেত। যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার আয়নাল হাসান জানান, নাটোরের উদ্দেশ্যে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্যাংকারটি যশোরের সিঙ্গিয়া স্টেশনে পৌঁছলে লাইনচ্যুত হয়। ফলে খুলনার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যশোর ও খুলনা স্টেশনে অনেক ট্রেন আটকা পড়ে।