মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আসামিকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (২৪ আগষ্ট) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক ফাইজুন্নেসা এ আদেশ দেন। জানা গেছে, শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী গ্রামের আ.মতিনের ছোট মেয়ে বাড়ৈখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী লায়লা আক্তার লিমু (১৭) গত ২০১৮ সালে ২৮ আগস্ট বিকালে সাড়ে ৪ টার দিকে কাপড় ক্রয় করার জন্য বাড়ি হতে পাশে বাড়ৈখালী বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে নিখোঁজের ৩ দিন পর ৩১ আগস্ট বাড়ৈখালী বাজারের পাশে ইছামতি নদীর পাড়ে একটি বস্তাবন্দী অবস্থায় লায়লা আক্তার লিমুর লাশ পাওয়া যায়। পরে, খোকনের বাড়ৈইখালী বাজারের টেইলার্স দোকানে রক্তের গন্ধ পেয়ে স্থাণীয়রা বিষয়টি নিহতের পরিবারকে জানায়। নিহতের পরিবার পুলিশ নিয়ে গিয়ে দোকান মালিক খোকনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী গ্রামের আ: আজিজ ফকিরের ছেলে নিহতের পিতা আব্দুল মতিন (৬৬) বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় মামলা করলে আসামী খোকন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। খোকন (৩০) সিরাজদীখান উপজেলার পাউসার গ্রামের বাবুলের ছেলে। পরে ২০ জন স্বাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত আসামীকে মৃত্যুদন্ডের রায় দেন। এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই রিপন বলেন, আমার বোন ঘটনার দিন আমাদের বাড়ির পাশের বাজারের খোকনের টেইলার্সের দোকানে কাপড় বানাতে গিয়েছিল। তখন খোকন আমার বোনকে ধর্ষন করে হত্যা করেছে। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পরে আরও বলেন, আমার ছোট বোনটা আমাদের পরিবারের সবার প্রিয় ছিল। ওর শোকে মামলার বাদি আমার বাবা অল্প বয়সে মারা গেছে। আমার দাদাও শোকে কাতর হয়ে ঘটনার কিছুদিন পরেই মারা যায়। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। রাস্ট্র পক্ষের আইজীবী অ্যাডভোকেট লাভলু মোল্লা বলেন, ভিকটিমকে ধর্ষন করে খুণ করার অভিযোগ ২০ জন স্বাক্ষী ও প্রমানের ভিত্তিতে প্রমানিত হওয়ায় আসামী খোকনকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় মৃত্যূদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের রায় দিয়েছে আদালত। তার সাথে পেনাল কোডের ২০১ ধারায় প্রমানিত হওয়ায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৭ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছে। এছাড়াও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৯(২) ধারায় প্রমানিত না হওয়ায় ওই ধারার অভিযোগ হতে খালাস দেওয়া হয়। আমি রাস্ট্র পক্ষের পিপি হিসাবে এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বলেন, আসামী খোকনকে দোষি সাব্যস্ত করে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় মৃত্যূদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড সহ পেনাল কোডের ২০১ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৭ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। রায়ের পর আসামীকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন আদালত।