ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর আভিযানিক টিম। এছাড়া, ডিবি’র আরেকটি অভিযানে দশ কেজি গাঁজা সহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে দৈনিক নবচেতনাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (বিপ্লব)। তিনি জানান, গত রোববার (১৮ জুন) একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি’র উপ-পরিদর্শক মোঃ সহিদুল ইসলাম পিপিএম এর একটি চৌকষ টিম রাত ৯টায় আশুলিয়া থানাধীন বিশমাইল এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি লোহার তৈরি চাপাতি, একটি লোহার তৈরি ছোড়া, একটি কাঠের বাটযুক্ত ছুরি, দুইটি লোহার তৈরি চাকু, একটি কাঠের বাটযুক্ত লোহার ছেন এবং ১টি কাঠের বাটমুক্ত বাটালি জব্দ করা হয়। গ্রেফতার ওই ৬ ডাকাত হলো- ইসহাক মোল্লা (৩৭), মোঃ মিনার হোসেন (২৮), মোঃ সাগর (২০), মোঃ রাহান (২৪), কাজী শরীফ (৩০) ও মোঃ সোহেল (৩৮)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এরা একটি সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। বহুদিন ধরে এরা সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় ডাকাতি করে আসছিলো। আশুলিয়া থানায় এদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ। এদিকে, রোববার (১৮ জুন) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ডিবি (উত্তর) এর উপ-পরিদর্শক মোঃ আনোয়ার হোসেন এর একটি টিম সাভার মডেল থানাধীন ব্যাংক কলোনী এলাকা থেকে দশ কেজি গাঁজা সহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ওই তিন ব্যবসায়ী হলো- মোঃ সাগর হোসেন (৩৮), মোঃ আশরাফুল ইসলাম (৪৫) এবং মো: কামাল শিকদার। এদের কাছ থেকে যথাক্রমে ৫ কেজি, তিন কেজি এবং দুই কেজি করে মোট দশ কেজি গাঁজা জব্দ হয়েছে বলে জানান ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ। দৈনিক নবচেতনাকে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার তিন আসামি জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে ঘটনাস্থল ও ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকায় বিক্রয় করে আসছিলো। উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আরেকটি ঘটনায় ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এর পিএস পরিচয়দানকারী এক প্রতারক এবং তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর)। সে তার এলাকায় মাদক ব্যবসা সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং তার প্রভাব বিস্তার করার জন্য বহুদিন যাবৎ নিজেকে ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এর পিএস হিসেবে পরিচয় প্রদান করে আসছিলো। তার নাম দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন (২৬)। সে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন নগরভেলা এলাকার খোরশেদ আলম এর পুত্র। এব্যাপারে দৈনিক নবচেতনাকে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন একজন মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ী। তার এলাকায় মাদক ব্যবসা সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং তার প্রভাব বিস্তার করার জন্য বহুদিন যাবত নিজেকে সে ঢাকা রেঞ্জ এর ডিআইজি মহোদয়ের পিএস হিসেবে পরিচয় প্রদান করে আসছে। তার কোনো আত্মীয় স্বজনকে পুলিশ ধরলে সে তার মোবাইল (নাম্বার-০১৭৯৯৬৮৮৫৬৭) দিয়ে ফোন করে নিজেকে ডিআইজি মহোদয়ের পিএস পরিচয় দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। এতে করে যে কেউ দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন এর নাম্বারে কল করলে তার কলটি ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এর সরকারী নাম্বারে চলে যায়। তিনি বলেন, উক্ত ঘটনাটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে ডিবি (উত্তর) এর একটি চৌকষ ও আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় প্রতারক দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন এবং তার সহযোগী হৃদয় আহমেদ (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়। ডিবি (উত্তর) এর ওসি আরও জানান, ধৃতদের ‘কল লিস্ট’ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন তার উক্ত নাম্বার হতে দুদকের পরিচালক সহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ফোন করেছে। এব্যাপারে প্রতারকদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বিভিন্ন সরকারী কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ফোন দিয়ে এমন প্রতারনা করে এসেছে বলেও জানায়। দ্বীন ইসলাম ওরফে শাওন এর বিরুদ্ধে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানায় এবং আসামী হৃদয় আহমেদ এর বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল এবং সবুজবাগ থানায় মামলা রয়েছে। উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানিয়েছেন ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ।