বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তত্ত্বাবধায়ক রোগে পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল রোববার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গতানুগতিক বক্তব্য। প্রতিদিনই তিনি এ কথা বলেন। সংবিধান অনুসারে চলতি সরকারই আগামী নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করবেন। শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। ভারত, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও তাই হবে। সংবিধানের কোনো ব্যত্যয় হবে না। এমনকী আন্তর্জাতিকভাবেও তাদের এ দাবির প্রতি কোনো সমর্থন নেই। যুক্তরাষ্ট্রও তাদের দাবিকে সমর্থন করেনি। এটি শুধু মির্জা ফখরুলের মুখেই আছে। তাকে তত্ত্বাবধায়ক রোগে পেয়েছে। আশা করি, তিনি এ রোগ থেকে শিগগির মুক্তি পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন জানিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছে চীন। এ নিয়ে সরকারে কোনো অস্বস্তি আছে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। আন্তর্জাতিকভাবে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী অবস্থান বিভিন্ন সময় দেখেছি। বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে মন্তব্য করেছে চীন। আমরা সেটা পর্যবেক্ষণ করছি। দু’দেশের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, গত ৫১ বছরে আমাদের পথচলায় তাদের বিশাল ভূমিকা আছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করছি।একই সঙ্গে চীনও আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। এ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তারা বিশাল ভূমিকা রেখেছে। কাজেই সব দেশের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক ভালো। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজশাহী বিএনপির আহ্বায়ক হত্যার হুমকি দিয়েছে। এরপর সিরাজগঞ্জের সমাবেশে স্থানীয় বিএনপির নেতা রাশেদুল হাসান রঞ্জনও একই হুমকি দিয়েছে। বিএনপি যে ভেতরে ভেতরে সেই ষড়যন্ত্রই করছে, তা তাদের নেতাদের কথাবার্তাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশীয় যে অপশক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, যে আন্তর্জাতিক অপশক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, সেই দুই অপশক্তি মিলে যখন বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিল, তখন তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ বেছে নিয়েছিল।’ ‘আজকে বিএনপিসহ যে রাজনৈতিক অপশক্তি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই কারণে পরপর তিনবার তিনি জনগণের রায় নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন। আজকে তারা (বিএনপি-জামায়াত) ষড়যন্ত্রের পথই বেছে নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যেভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপিও আজ একই পথে হাঁটছে, একই পরিকল্পনা করছে। সেটারই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাদের বক্তব্য।’