নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের স্থলবন্দরগুলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। আগামীতে আমাদের স্থলবন্দরগুলো হবে স্মার্ট, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব।
বুধবার (১৪ জুন) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে (রুপসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুম) ‘এক্সিলারেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেকটিভিটি ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয়া (অ্যাকসেস)’ প্রকল্পের লঞ্চ ইভেন্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কর্তৃক বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, ভূটান ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ কর্তৃপক্ষ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আধুনিক, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব স্থলবন্দর বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৫টি স্থলবন্দর ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট ৯টি স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সড়কপথে বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কাস্টমস, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে অ্যাকসেস প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের জন্য সর্বমোট ৭৫৩.৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা প্রদান করছে। এতে বাংলাদেশ সরকারের ৬৪৬.৪৫ কোটি টাকাও যোগ হবে। ঋণ সহায়তার মধ্যে বাংলাদেশে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বেনাপোল, ভোমরা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর ৩টির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে ২৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২,৮১০ কোটি টাকার কাজ অন্তর্ভুক্ত আছে।
অ্যাকসেস প্রকল্পের আওতায় স্থলবন্দর ৩টিতে জলবায়ু সহনশীল ও গ্রিন অবকাঠামো নির্মাণ, আধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, সৌর প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবহার, সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা এবং স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাফিক ব্যবস্থা ইত্যাদি কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া, স্থলবন্দর ৩টির পরিচালনা দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে অটোমেশন এবং ডাটা শেয়ারিং-এর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে এক দেশের স্থলবন্দর থেকে অন্য দেশে যানবাহন প্রবেশ এবং ত্যাগের পূর্বেই যানবাহন এবং পণ্য সংশ্লিষ্ট সকল তথ্যাদি প্রেরণ ও প্রাপ্তির জন্য কমন প্লাটফর্ম ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের স্থলবন্দরগুলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রতিবেশীসুলভ ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠবে।
বিশ্ব ব্যাংকের সাউথ এশিয়ার প্র্যাকটিস ম্যানেজার (ট্রান্সপোর্ট) ফি ডেং-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, সড়ক যোগাযোগ এবং মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার, বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইনফ্রাসটাকচার) মি. গোয়াংঝি চেন এবং অ্যাকসেসের সিনিয়র ট্রান্সপোর্ট স্পেশালিস্ট এবং টাস্ক টিম লিডার এরিক নোরা।