দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দেশের আইন ও আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে এ বিবৃতি দেন তিনি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির মামলায় এর আগে বিএনপির দুই নেতাকে (ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমানউল্লাহ আমান) নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রেখে দেশের উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে। বিএনপির এ দুই নেতার আজকের পরিণতি তাদের ধারাবাহিক অপরাজনীতিরই ফসল। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনমালে হাওয়া ভবন খুলে তারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছিল, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেসময় হাওয়া ভবনের কর্ণধার জিয়াপুত্র তারেক রহমানের দুর্নীতির খতিয়ান বিশ্ব গণমাধ্যম ও বিশ্বখ্যাত গোপন নথি প্রকাশকারী সংস্থা উইকিলিকসে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেন, সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এবং তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর নিম্ন আদালত শাস্তিমূলক রায় দেন। প্রায় ১৬ বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত তাদের সাজা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। যার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও আইন ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়ও ছাত্রলীগের নেতারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিএনপিই বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার মধ্যদিয়ে পবিত্র সংবিধানকে কলঙ্কিত করেন। মূলত জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, বিএনপি দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছেন এবং দলের চিহ্নিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিয়েছেন। অনুরূপভাবে তারা আদালতের রায়কে ‘ফরমায়েশি রায়’ বলে দেশের উচ্চ আদালত এবং পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছেন। তিনি বলেন, মার্কিন নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর বিএনপি তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে করুণাপ্রাপ্তির আশায় সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলা তাদের সেই চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এ ধরনের অপরাধের জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে তাদের অচিরেই জবাবদিহি করতে হবে।