বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে ফসলের অধিক উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণেরও বিকল্প নেই। কেননা, অল্প সময়ে সাশ্রয়ী পদ্ধতি ব্যবহার করে একমাত্র কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমেই ফসল উৎপাদন সম্ভব। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উপর গুরুত্ব দিয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষি সেবা প্রদান করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি হাতের স্পর্শ ছাড়াই ধানবীজ বপন কার্যক্রমে হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নে সাড়া পড়ে গিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অটোমেটেড সিড সোয়িং মেশিনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় উপায়ে প্লাস্টিকের ট্রেতে ধানের বীজ বপণ হচ্ছে। মেশিনের একদিক থেকে ঝুরঝুরে শুকনো মাটি ট্রেতে ভর্তি হয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে ।আরেকটি চেম্বারে এগিয়ে যাওয়া ট্রেতে সারি সারি বীজ স্থাপন হয়ে যাচ্ছে এবং শেষের আরেকটি চেম্বারে বপনকৃত বীজে পানি স্প্রে করে দেয়া হচ্ছে। উল্লেখিতি কাজগুলো সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ভাবে হাতের স্পর্শ ছাড়াই হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জনাব মোঃ আল মামুন শিকদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজ বপন কার্যক্রমে অধিক সময়, অধিক অর্থ ও অধিক শ্রমের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি চারা উত্তোলনের সময় শিকড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রোপিত চারার রিকোভারি স্টেজ দীর্ঘায়িত হয়ে যায়, এতে ধানের জীবনকাল বেশি হয়ে যায়, একক জমিতে অধিক চারার প্রয়োজন পড়ে। অটোমেটেড সিড সোয়িং মেশিনের মাধ্যমে ট্রেতে বীজ বপনের ক্ষেত্রে চারার উত্তোলনজনিত ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে এড়ানো যায় এবং নির্দিষ্ট সময়ে ফসল উত্তোলন করা যায়। তিনি আরও বলেন, ট্রেতে উৎপাদিত চারা পরবর্তিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপণ করা হবে। ফলে অল্প সময়ে বিশাল আয়তনের জমিতে স্বল্প খরচে চারার রোপণ কার্যকম সম্পাদন করা যাবে। তিনি জানান, এ কার্যক্রমের ফলে ধানের উৎপাদন খরচ যেমন কমে আসবে তেমনিভাবে উৎপাদন মৌসুমে শ্রমিকের ঘাটতি এড়িয়ে যথাসময়ে ফসল উৎপাদন ও উত্তোলণ করা যাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কৃষি উদ্যোক্তা এ বি এম আতাউল্লাহ জানান, উপজেলা কৃষি অফিস হতে প্রাপ্ত অটোমেটেড সিড সোয়িং মেশিনের মাধ্যমে তিনি প্রথমবারের মত ধানের বীজ বপণ ও পরবর্তিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের অংশিদার হতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।