দিনব্যাপী আনন্দ-উল্লাস আর হৈ-হুল্লোড়ে পুনর্মিলনী উদযাপন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। শনিবার টিএসসিতে নানা আনুষ্ঠানিকতায় আড্ডা-গল্প জমে ওঠে বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়রসহ সবার মাঝে।
মধ্যাহ্ন ভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং র্যাফেল ড্রসহ নানা আয়োজনে মুখোরিত ছিল টিএসসির সবুজ চত্বর। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে টিএসসি মিলনায়তনে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় মিলনমেলার আনুষ্ঠানিকতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হকের সভাপতিত্বে বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, অধ্যাপক আকরাম হোসেন, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ও অধ্যাপক মনজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ইউরোপীয় শিক্ষার প্রভাব আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে পড়লেও বাংলা বিভাগের ওপর খুব বেশি পড়েনি। এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক সময় নিজের চেষ্টায় ইংরেজি ভাষা শিখতেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত সবসময়ই বাংলা বিভাগের আলাদা গুরুত্ব বিদ্যমান রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের অগ্রভাগে থাকা ও বর্তমানে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ প্রদর্শন করে যাচ্ছে। আমরা যদি বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করতে চাই তাহলে এর জন্য বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে।
অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম অন্য বিভাগের থেকে আলাদা। আমাদের শিক্ষকরা এই বিভাগকে উন্নত করেছেন। তারা মূলত দুটি কাজ করেছেন প্রথমত, কলকাতায় যারা ভাষা নিয়ে কাজ করতো তাদের করেছে ঢাকামুখী অর্থাৎ ভাষা চর্চা বাংলাদেশ কেন্দ্রীক করেছেন। দ্বিতীয়ত, বাংলা চর্চা বাইরে নিয়ে গিয়েছেন অর্থাৎ গবেষণা, সৃষ্টিশীল কাজ, অনুবাদ ইত্যাদির মাধ্যমে বিদেশিদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট করেছেন। আমি আশা করব এখনকার শিক্ষার্থী ও গবেষকরা এটার যেন ধারাবাহিকতা রক্ষা হয় সেটা চেষ্টা করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে কবি অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেন, আমরা সবাই ঘরে-বাইরে সর্বত্র চিরন্তন শিক্ষক। আমরা বাংলা ভাষার শিক্ষক। অনেকে দেশ ছেড়ে বিদেশ চলে যাচ্ছে। চারিদিকে এক শূন্যতা বিরাজ করছে। বর্তমানে বাংলা খুঁজে পাওয়া যায় না। এখন চারিদিকে তাকালে দেখি ইংরেজি শব্দে ব্যানার লেখা। এটা বন্ধের জন্য অ্যালামনাইয়ের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো উচিত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় বিভাগ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।