জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ফার্মেসি বিভাগের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলিতে যোগ্যতাসম্পন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল বিজ্ঞানীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সালে ফার্মেসি বিভাগ চালু করে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: মনিরুজ্জামান খন্দকার, ফার্মেসি অনুষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ড. সিতেশ চন্দ্র বাছার, এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মতিয়ার রহমান, বীকন গ্রুপের পরিচালক মনজুরুল আলম এবং প্যারাগন ফার্মাসিউটিক্যালের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ শামীম। অনুষ্ঠানের আহবায়ক হিসেবে ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মনির হোসেন। এছাড়াও এসময় বিভাগীয় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ভবন থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে কেক কাটার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্ব। পরে আলোচনা সভায় একে একে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্য উঠে আসে দেশের মানুষের জন্য ফার্মেসি ও ফার্মাসিস্টদের গুরুত্ব ও প্রয়োজন কথা। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনে ঔষধের গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া বর্তমানে বিশ্বের ১৬০ টি দেশে বাংলাদেশের প্রস্তুত ঐষধ রপ্তানি হয়ে থাকে। যা আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকাকে দিন দিন আরো সচল করে তুলছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ডিরেক্টর মনজুরুল আলম জানান, “নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সারা দেশের অনেক শিক্ষার্থীদের আবেদন পেয়ে থাকি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবেদনও আমরা পাই। তবে আজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কোনো শিক্ষার্থীর নিয়োগ পাওয়ার আবেদন আমরা বাতিল করবো না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারাই এখানে আবেদন করবে যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদেরই এখানে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে।”
অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যা যা আছে তার অনেক কিছুই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। কিন্তু নিজেদের পারফর্মেন্সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশের অন্যতম সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়। আজকের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ঐষধ কোম্পানির ডিরেক্টররা যেসব সুযোগ-সুবিধা আমাদের শিক্ষার্থীদের দেওয়ার কথা বললেন, সেগুলো অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরাও চাই, একাডেমিক শিক্ষা ও ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয় হোক যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে দেশের সাধারণ মানুষের দিকে নজর রেখে ঔষধের দাম নির্ধারণ করতে হবে, যেনো সবাই অন্তত নিজেদের প্রয়োজনীয় ঐষধগুলো কিনতে পারে। ঐষধের ধারণাটা যেন এমন হয় ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ঔষধ’।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথি, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে জবি উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক বলেন, “২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর সফলভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়টি সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। তাছাড়া, আমরা কারো সাথে তুলনা করতে চাই না, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নামেই পরিচিত হতে চাই। আমাদের এখানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকার পরও শিক্ষার্থীরা সবক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, এখান থেকেই শিক্ষার্থী নিজেদের যথাযোগ্য করে গড়ে তুলে সোনার বাংলাদেশ গড়তে সচেষ্ট হবে। ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবিষয়ে যর্থাথ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।”