পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(পাবিপ্রবি) ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচের) শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার( ৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা চত্বরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নবীনবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাস ছিল জাকমজমকপূর্ণ, বর্ণিল এবং কোলাহলমুখর। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন।
সকাল ১০টায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের আহবায়ক অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত, আলোকিত, পরিশীলিত করার জায়গা। বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নিজের স্বপ্নপূরণের জায়গা। আলোর দিকে যাত্রা শুরুর সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। হোচট খেয়ে কীভাবে উঠে দাঁড়াতে হয় তা শেখার কৌশল শেখায় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানকে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করে দক্ষ মানব সম্পদের পাশাপাশি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সর্বোপরি এখান থেকে জ্ঞান অর্জন, আহরণ ও জ্ঞান তৈরি করতে হবে। দেশটাকে ভালোবাসতে হবে, দেশকে বুকে ধারণ করে নিজকে, পরিবার, সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সবার উপরে দেশমাতৃকা। যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই বাংলাদেশ গড়ার জন্য দক্ষ মানবিক আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। তোমাদের মধ্য থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী নাগরিক এখান থেকে তৈরি হবে বলে আমি আশাকরি।
বিশেষ অতিথির হিসাবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ্ উদ্দিন বলেন, প্রতিটি শিক্ষাঙ্গন এক একটি বাংলাদেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে নবীন শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে। আগামীর বাংলাদেশের জন্য প্রযুক্তি নির্ভর করে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। ৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তোমাদের এক একজন দক্ষ কারিগর হতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান বলেন, রাষ্ট্র সমাজের বিবর্তনে আলোকিত মানুষ গড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী প্রজম্মের রূপকার তোমরা। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই জাতিকে এক করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙ্গালিকে নতুন দেশ, মানচিত্র দিয়েছেন। তাঁকে সবসময় শ্রদ্ধায় স্মরণ করতে হবে। অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও সবসময় তার উপর নজর রাখতে হবে। সন্তান পড়ালেখা ছাড়াও অন্য কোনো ধরনের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তার খোঁজ খবর নিতে হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের মিলিত প্রচেষ্ঠায় আমরা শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলব।
প্রক্টর মো. কামাল হোসেন সকল রকমের সমস্যায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।
আরও বক্তব্য দেন ডিনদের মধ্যে অধ্যাপক ড. মো. খায়রুল আলম, অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার সরকার, অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান, ড. মো. রাহিদুল ইসলাম ও ছাত্র উপদেষ্টা ড. সমীরণ কুমার সাহা, নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাহানারা খাতুন ও আরেফিন দুর্জয়।
আলোচনা পর্ব শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ পর্যায়ে উপাচার্য প্যান্ডেলে বসে থাকা অভিভাবকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং দিকনির্দেশনা দেন।