গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইতিহাসে প্রথমবারের মত মেয়েদের জন্য কমনরুম চালু করেছে বাংলা বিভাগ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বা কোনো বিভাগ নিজ উদ্যোগে মেয়েদের জন্য কমনরুম চালু করে নি। বাংলা বিভাগের এই উদ্যোগকে বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশংসার চোখে দেখছেন।
আজ রবিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে এই কমনরুমের উদ্বোধন করেন বাংলা বিভাগের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা মুক্তা ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। এসময় বিভাগটির ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
কমনরুমটিতে মেয়েরা ক্লাস পূর্ব, ক্লাস চলাকালীন ও ক্লাস পরবর্তী বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পাবেন। তাছাড়া, এখানে ধর্মীয় উপাসনাও করা যাবে।
ক্লাস পূর্ব, ক্লাস চলাকালীন বা ক্লাস পরবর্তী মেয়েদের বিশ্রামের জন্য একটি কমনরুমের প্রত্যাশা ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে বাংলা বিভাগের হাত ধরে প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য বিভাগেও এমন একটি কমনরুমের প্রত্যাশা করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অর্চি রায় বলেন, নিঃসন্দেহে এটা আমাদের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের সময় যথেষ্ট লম্বা হয়ে থাকে, অনেক মেয়ে খুলনা থেকে ক্লাস করতে আসে। তখন বিশ্রাম কিংবা আনুষঙ্গিক কোনো প্রয়োজনে স্পেস পাওয়া যায় না যেটা বিবিধ সমস্যার সৃষ্টি করে। অনেকেই আছেন বিবাহিত যাদের ছোট বাচ্চা আছে যাদের টেক কেয়ার এর জন্য নির্দিষ্ট কোন স্থান ছিল না। নামাজের জন্য সুনির্দিষ্ট জায়গা ছিল না। এই সকল সমস্যার সমাধান এই কমন রুম উদ্বোধনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ বাংলা বিভাগকে এমন একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদনের জন্য।
বাংলা বিভাগের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, মেয়েদের বিশ্রাম ও ধর্মীয় উপাসনার জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বা অনুষদ অনুযায়ী বা ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক কোনো কমনরুম ছিলো না। আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম তখন দেখেছি যে, মেয়েদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে কমনরুমের ব্যবস্থা ছিল। সেখানে মেয়েরা বিশ্রাম নিতে পারতো ও নামাজ পড়তে পারতো। আমি যখন বিভাগের সভাপতি হয়, তখন বিষটি নিয়ে ভেবেছি। এ বিষয়ে বিভিন্ন ফোরামে কথা বলেছি, বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি, সবাই এটিকে সমর্থন জানিয়েছেন। ঋতুস্রাব যখন হয় তখন মেয়েদের যে কষ্ট হয় এই সময় যেন তারা একটু বিশ্রাম করতে পারে, গর্ভবতী মেয়েরা, যেসব মেয়েরা মা হয়েছে তারা ক্লাস-পরীক্ষা চলাকালীন এখানে বিশ্রাম নিতে পারবে, নামাজ পড়তে পারবে, পড়াশোনাও করতে পারবে। যেটা মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলা বিভাগের এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও মেয়েদের জন্য কমনরুমের ব্যবস্থা করবে।
এছাড়াও তিনি ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ওয়াশরুমের বিষয়েও জোর দিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, বাংলা বিভাগের জন্য মেয়েদের আলাদা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করছি আমরা। ওয়াশরুমে বেন্ডিং মেশিন বসানোর জন্য ইতোমধ্যে এসিআই কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করছি। মেয়েদের ঋতুস্রাব চলাকালীন যেটা দরকার। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নিলে আরো ভালো হয়।