আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মান-অভিমান ভুলে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এগিয়ে যেতে হবে।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় পার্টি (জেপি)’র ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অধিবেশনটি রমনার ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে- বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিজয়কে সুসংহত করতে হলে- মুক্তিযুদ্ধেরচেতনাকে বাঁচাতে হবে।
দেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই- মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতিকে ভালো ও মেধাবীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে, নতুবা খারাপ লোকদের হাতে রাজনীতি থাকলে দেশ খারাপ থাকবে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশ উল্টো পথে চলেছে, বিপ্লবের বদলে প্রতিবিপ্লব হয়েছে। বার বার রাজনৈতিক সম্পর্কে দেয়াল তৈরি হয়েছে।
রাজৈনতিক দলের মধ্যে কোন ব্রিজ বা সেতু তৈরি হয়নি- জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে শক্তিশালী বিরোধীদল দরকার। কিন্তু আমাদের দেশে রাজনীতির নষ্ট দলের কাছে বারেবারে বিভিন্ন দল আত্মসমর্পণ করেছে। নষ্ট রাজনীতি নষ্ট রাজনীতিককেই জন্ম দেয়।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, নষ্ট রাজনীতি নষ্ট মানুষের জন্ম দেয়, নষ্ট রাজনীতিবিদের জন্ম দেয়। নষ্ট রাজনীতিকরা নষ্ট রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখে, আর বাংলাদেশের অবস্থা হয়েছে ঠিক তাই। এজন্য তো আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। যে লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ, সেই বাংলাদেশ কি আমরা রাখতে পেরেছি?
আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেন, খারাপ লোকদের কাছে রাজনীতি গেলে দেশটা খারাপ হয়ে যাবে। খারাপ লোকের কাছে রাজনীতি থাকলে তারা এমপি হবে, মন্ত্রী হবে, দেশ চালাবে। ভালো লোকদের রাজনীতিতে আনতে হবে। সৎ লোকদের আনতে হবে। মেধাবীদের রাজনীতিতে আনতে হবে, তা না হলে রাজনীতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। চরিত্রবানদের রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে, তা না হলে রাজনীতি চরিত্রহীন হয়ে যাবে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, স্বাধীনতার পর তিন তিনবার কেউ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি। যেটা আমার ভাগ্যে জুটেছে। আল্লাহর রহমত আর শেখ হাসিনার উছিলায়। আমার ১৭ বছরের মন্ত্রিত্ব, এটাও বিরল সৌভাগ্যের ব্যাপার। তিনবারের সাধারণ সম্পাদক সৌভাগ্যের ব্যাপার। উপরে আল্লাহ, নিচে শেখ হাসিনা- এত দূর পর্যন্ত আমাদের নিয়ে এসেছেন। এটা অস্বীকার করলে আমার অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হবে। এটাই বাস্তবতা।
জেপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জেপির সাধারণ সম্পাদকশেখ শহিদুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জোট গঠন নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোট করা ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি সংবিধান নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। অশুভ উদ্দেশ্যে বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
এ সময় বিএনপিকে নিজেদের দল মেরামত করার আহ্বান জানান তিনি।