স্থায়ী ক্যাম্পাসের ইস্যুতে দেওয়া আলটিমেটামের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব বিশ্ববিদ্যালয় দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিলে তাদের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। তবে ইউজিসির দেওয়া ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে অগ্রগতি হওয়ায় তাদের তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে স্থানান্তরের সময় দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১ জানুয়ারি) ইউজিসিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনা সংক্রান্ত একটি জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
সভা সূত্রে জানা যায়, ইউজিসির দেওয়া ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে পিছিয়ে থাকা তালিকাভুক্ত ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নয়টি প্রতিষ্ঠানের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। কারও ইন্ট্রেরিয়ার ডিজাইন, কারও বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ, কারও আসবাবপত্র কেনা বাকি রয়েছে। এমন নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এসময়ের মধ্যে তাদের একাডেমি ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এসব প্রতিষ্ঠানকে লিখিতভাবে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে অগ্রগতি হয়নি ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর মধ্যে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের নাম রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ রোববার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ১২ বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হতে হবে। আইন অমান্য করা এমন ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। এসময়ের মধ্যে তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন করে সব কার্যক্রম সেখানে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে যাদের বিদ্যুৎ সংযোগসহ ইউটিলিটি সমস্যা রয়েছে তাদের তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভবন নির্মাণাধীন থাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলো দ্রুত যাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের ছয় মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জমি কেনাসহ কোনো ধরনের অগ্রগতি হয়নি ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের। যারা স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ও অস্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে। তারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি বছর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পরে যদি তারা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়, সে ক্ষেত্রে পরবর্তীসময়ে বিবেচনা করা হবে।
বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে বছরব্যাপী সময় দেওয়া হয়নি। যাদের নতুন করে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে, তাদের পরবর্তীসময়ে সিদ্ধান্ত ৩১ মার্চ নেওয়া হবে। ছয় মাস সময় পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হবে ৩০ জুন। নির্ধারিত সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হলে সেগুলোও নতুন শিক্ষার্থী বন্ধের সিদ্ধান্ত হবে।