এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন রাজশাহীর পরিবহন মালিকরা। ৩ ডিসেম্বরে বিএনপির বিএনপির গণসমাবেশকে ঘিরে নয়, নিজেদের ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়ায় ধর্মঘটের পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি পরিবহন মালিকদের।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর পরিবহন মালিকদের ১০ দফা দাবি পূরণে বেধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে বুধবার রাত ১২টায়। তবে নির্ধারিক সময় শেষ হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তাই পরিবহন মালিকদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
পরিবহন ধর্মঘট শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদের সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। যার প্রায় প্রত্যেকটিতেই সমাবেশ শুরুর কয়েকদিন আগে থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে স্থানীয় পরিবহন মালিকরা। তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীতেও গণসমাবেশের দু’দিন আগে থেকেই অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হচ্ছে বলে দাবি বিএনপির। তবে পরিবহন ধর্মঘট কিংবা মামলা দিয়ে সমাবেশ বাধাগ্রস্ত হবে না বলেও দাবি রাজশাহীর গণসমাবেশ আয়োজকদের।
জানতে চাইলে বিএনপির মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে না দেওয়ার অংশ হিসেবে দু’দিন আগেই পরিবহন ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি পথে বিএনপির আগত নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ তাদের কোথাও দাঁড়াতে দিচ্ছে না, রাস্তায় আটকিয়ে দিচ্ছে। তবে যে কোনোভাবেই হোক সমাবেশ সফল হবেই বলে দাবি এই বিএনপি নেতার।
তবে ধর্মঘট প্রসঙ্গে বিএনপি নেতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদের সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে কারও সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। আমাদের এই দাবিগুলো দীর্ঘদিনের। কিছু দিন আগেও আমরা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি পূরণে আল্টিমেটাম দিয়েছি। কিন্তু দাবি পূরণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় নি।
তিনি আরও বলেন, গত ২৬ নভেম্বর নাটোরে সভা করে দাবি পূরণ করতে বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাত পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। দাবি না মানলে আমরা ধর্মঘটে যাবো বলে জানিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সময় পার হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। ফলে আমাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে যেতেই হচ্ছে। তাই আমরা কঠোর পথে যেতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
উল্লেখ্য, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধান করাসহ হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে থ্রিহুইলার, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ও জ্বালানি তেলসহ যন্ত্রাংশের মূল্য হ্রাস করাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেন রাজশাহী বিভাগীয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।