রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, রাজশাহী মানেই রাজশাহীর রেশম। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজশাহী রেশম কারখানা অনেক কষ্টে চালু করেছি। রেশম শুধু রাজশাহীরই নয়, সমগ্র বাংলাদেশের ঐতিহ্য। রেশম শিল্পকে লাভজনক শিল্পে পরিনত করতে ও এর ঐহিত্য টিকিয়ে রাখতে আমাদের যা করা প্রয়োজন; তাই করতে হবে।
সোমবার সকালে রাজশাহী রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে বোর্ডের বিষয়াদি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আয়োজিত পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, কীভাবে রেশম শিল্পকে লাভজনক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের ভাবতে হবে। ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী রেশম বোর্ডের উন্নয়নে বর্তমান সরকার কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে কিছু কাজ হয়েছে, তবে অনেক কাজ বাকি। রেশমের ঐহিত্য কোনভাবে ধরে রাখতে পেরেছি, তবে এটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের আরো বেশি নজরদারি ও সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজশাহীর রেশম যাতে আবারও প্রাণ ফিরে পায়- তার জন্য আমাদের আরো অনেক কাজ করতে হবে। এর জন্য আমার বিশেষ প্রচেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সভাপতি শ্যাম কিশোর রায় সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বোর্ডের সদস্য ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউলস্নাহ।
সভায় জিএসএম জাফরউলস্নাহ বলেন, রাজশাহীতে যোগদানের পরে রেশম শিল্পকে অন্য সাধারণ শিল্পের মতোই বিবেচনা করেছিলাম। যার জন্য শুরুতে এটি নিয়ে তেমন কিছু ভাবিনি। তবে সময় ও কাজের সূত্রে বুঝতে পেরেছি, রেশম শিল্প পুরো রাজশাহীকেই প্রতিনিধিত্ব করে। এ ধরনের শিল্পকে কখনোই হারাতে দেওয়া যায় না। অবশ্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও সেটি চান না। আমরা যদি সরকারের কাছে রেশমের সম্ভাবনা ও কার্যক্রম ভালোভাবে তুলে ধরতে পারি, অবশ্যই এই শিল্পকে ফের প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। এর জন্য যা করার, আমরা তা অবশ্যই করবো।
রাজশাহী শহরের শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় রাজশাহী রেশম কারখানা। ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার অজুহাত দেখিয়ে কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানার প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক। সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নেন। তার আন্ত্মরিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালের ২৭ মে পরীক্ষামূলকভাবে কারখানার ৫টি লুম চালু করা হয়। এরপর আরো ১৪টি লুম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। সবশেষ ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি মোট ১৯টি লুম নিয়ে রাজশাহী রেশম কারখানায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাপড় উৎপাদন শুরম্ন হয়। পর্যায়ক্রমে কারখানার আরও ২৩টি লুম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।