রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আয়োজনে দেশবরেণ্য ৬ জন গুণীজনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টায় নগর ভবনের গ্রিনপ্লাজায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গুণীজনদের ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন, উত্তরীয় পরিয়ে তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা স্মারকপত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। সংবর্ধিত গুণীজনেরা হলেন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, আইন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর, অর্থনীতিবিদ, লেখক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদ খান এবং শিক্ষাবিদ, নাট্যকার ও লেখক অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, একসঙ্গে এতো গুণীজনদের সংবর্ধনা দেওয়ার সৌভাগ্য আমরা বেশি পাই না। দেশবরেণ্য গুণীজনেরা দেশের জন্য, জাতির জন্য, স্বাধীনতার মূল স্রোতকে ধরে রাখবার জন্য, সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য যা যা করেছেন, সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। তারা তাদের কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন, সমাজসেবী ও নারীনেত্রী শাহীন আকতার রেণী। অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে লেখা আমাদের সংবিধান। সংবিধান নিয়ে যেভাবে কাঁটাছেঁড়া করা হয়েছে, তা কষ্টের। আপনারা খেয়াল রাখবেন, এই সংবিধানটা যেন আমরা আমাদের বক্ষে ধারণ করি, এটাকে প্রটেক্ট করি। তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে ২০১৫ সালে এক বার এসেছিলাম। এবার এসে দেখছি আমূল পরিবর্তন। রাজশাহীর দৃশ্যমান এই উন্নয়ন প্রমাণ করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, রাজশাহী সবুজে বিবর্তিত। নিজ চোখে দেখে যেতে পারলাম কী করে একটি নগর জীবন্ত ও সজীব হয়ে উঠেছে। পুরো দেশ ঘুরে দেখুন এমন পরিচ্ছন্ন ও সুবজ নগরী গড়ে তুলতে পারছি না। রাজশাহী সবুজ ও গণমুখী নগর হিসেবে গড়ে উঠছে। জীবন আর শিক্ষা কখনো আলাদা হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ আর কোনো দিন হবে না। কারণ মানুষের এখনও পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা রয়েছে। গ্রামের কৃষি শ্রমিকরা এখন প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করেন। দুর্ভিক্ষ শুধুমাত্র উৎপাদনহীনতার জন্য হয় না, মানসিকতার জন্যই দুর্ভিক্ষ হয়। সবার আগে মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন। অনুষ্ঠান শুরুর আগে নগর ভবনের প্রধান ফটকে পৌঁছালে সংবর্ধিত গুণীজনদের বর্ণিল আয়োজনে বরণ করে নেওয়া হয়। নৃত্য ও গানে গানে তাদেরকে সংবর্ধনা মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্বাগত নৃত্য পরিবেশন করেন ধ্রুপদালোকে। এর আগে শুক্রবার সকালে নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবর রহমানের ম্যুরালে এবং কাদিরগঞ্জে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংবর্ধিত গুণীজনরা। এ সময় রাসিক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও মেয়রপত্নী সমাজসেবী শাহীন আকতার রেণী সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।