চুয়াডাঙ্গা শহরের বিগবাজারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। খুশি খাতুন নামে এক নারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে শিশুখাদ্যসহ বিভিন্ন মালামালের তদারকি করা হয়। এ সময় মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে বিগ বাজারের মালিক আজিজুল হককে ৫০ হাজার ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সরবরাহকারী ডিলার মেসার্স সাদিক এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জানা গেছে, গত বুধবার বিকেল ৪টার দিকে চুয়াডাঙ্গা মুক্তিপাড়ার হেলাল উদ্দীনের স্ত্রী খুশি খাতুন তার দুই শিশু সন্তানের জন্য শহরের বিগ বাজার নামক প্রতিষ্ঠান থেকে আকিজ গ্রুপের ফার্ম ফ্রেশ নামক ৬টি প্লাস্টিকের বোতলের জুস কেনেন। এরপর রাত ৯টার দিকে তার দুই কন্যা সন্তানে ওই জুস খেতে দেন। এরপরই বড় মেয়ে জারামনি (৬) শুরু হয় বমি আর ছোট মেয়ে তানহার (২) শুরু হয় ডায়রিয়া। এক পর্যায়ে ফার্ম ফ্রেশ কোম্পানীর ওই জুসের বোতলে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ দেখতে পান। যা ইতোমধ্যে ৫ মাস আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে। এছাড়াও জুসের বোতলের ভেতর জমাট বাধা অবস্থায় দেখা যায়। সাথে সাথে তিনি তার দুই মেয়েকে বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতলে ভর্তি করান। সেই সাথে অভিযোগ দেন ভোক্তা অধিদপ্তরে। চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ এ অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালান বিগ বাজারে। অভিযানকালে ওই কোম্পানীর অনেকগুলো জুসের বোতলে মেয়াদোত্তীর্ণ দেখতে পান। সেখানে থেকে জুস কোম্পানীর ডিলার মেসার্স সাদিক এন্টারপ্রাইজের গোডাউনে অভিযান চালানো হলে সেখানেও মেলে বিভিন্ন ধরণের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য। পুনরায় বিগবাজারে অভিযানে চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওই পণ্যগুলো জব্দ করা হয় এবং জনসম্মুখে তা ধ্বংস করা হয়। অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে বিগ বাজারের মালিক আজিজুল হককে ৫০ হাজার ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সরবরাহকারী ডিলার মেসার্স সাদিক এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও জরিমানার ২৫ ভাগ টাকা ভুক্তভোগী খুশি খাতুনকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১২ হাজার ৫শ টাকা দেয়া হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক আসাদুর রহমান মালিক খোকন জানান, সাধারণত বাজারের যে কোনো জুস খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হতে পারে। তবে অভিভাবকদের এ ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে।