দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলোয় রান করে আসছেন ভারতীয় তরুণ ব্যাটসম্যান সরফরাজ খান। কিন্তু জাতীয় দলে তার ডাক পাওয়াটা যেন অসম্ভবই হয়ে উঠেছিল। এবার চোটের কারণে দুই ক্রিকেটার ছিটকে যেতেই দরজা খুলল সরফরাজের। তবে বিষয়টিকে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে দেখছেন— ‘একেবারে নির্বাচকদের দরজা ভেঙে ঢুকে যাওয়ার মতো।’ ভারত ‘এ’ দলের হয়ে সাম্প্রতিক আনঅফিসিয়াল টেস্টে সরফরাজ করেন ১৬১ রান। যা তাকে দলে নিতে নির্বাচকদের বাধ্য করেছে!
ভোগলের এমন মন্তব্যের হেতু জানা যাবে অতীতে নজর ফেরালে। ২০১৯ সাল থেকে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য পারফর্মও করছেন সরফরাজ। ২০১৯-২০ ও ২০২১-২০২২ টানা দুই মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে তিনি করেছেন ৯০০–এর বেশি রান। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৬৬ ইনিংসে তার গড় ৬৯.৮৫, যা ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ গড় ৯৫.১৪ স্যার ডন ব্রাডম্যানের।
এর আগে ২০০৯ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে ভারতের হ্যারিস শিল্ড আন্তস্কুল টুর্নামেন্টে ৪৩৯ রানের ইনিংস খেলে আলোয় আসেন সরফরাজ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এত ধারাবাহিক হওয়া সত্ত্বেও কিছুতেই তার জন্য জাতীয় দলের সুযোগ আসছিল না। যা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছিল নির্বাচকদের। নিজেদের ওপর থেকে ভারতীয় বোর্ডের সেই চাপ কমানোরও সুযোগ আসে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও লোকেশ। এরপর তিনজন ক্রিকেটারকে নতুন করে স্কোয়াডে ডাকে ভারত। স্পিনার সৌরভ কুমার, স্পিন অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে দলে আসেন ব্যাটার সরফরাজও।
সরফরাজ দলে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ (সাবেক টুইটার) একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন হার্শা। তিনি লিখেছেন, ‘সরফরাজ খান কেবল দরজায় কড়া নাড়েনি, দরজা ভেঙে দিয়েছে। পিচ যদি হায়দরাবাদের মতন হয়, আমি আশা করব দুজন ব্যাটারই (পাতিদার ও সরফরাজ) খেলবে। তৃতীয় স্পিনার আসবে পেসারের জায়গায়।’
তবে দলে ঢুকলেও, একাদশে জায়গা পাওয়ার নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না সরফরাজ। এজন্য তাকে একাদশে রাখা নিয়েও প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ভোগলে, ‘হায়দরাবাদ টেস্টের পর ভারতের একাদশ নির্বাচন সহজ নয়। পাতিদার ও সরফরাজ দুজনেই কি খেলবে? তৃতীয় স্পিনার নিয়ে সিরাজকে বসানো হবে? নাকি রবীন্দ্র জাদেজার জায়গায় সোজা ওয়াশিংটন সুন্দরকে খেলাবে ভারত আর পাতিদার ও সরফরাজের মধ্যে একজন বেছে নেবে?’
উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া আহমেদাবাদের প্রথম টেস্টে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ভারতকে ২৮ রানে হারায় সফরকারী ইংল্যান্ড। ফলে ৫ ম্যাচে সিরিজে রোহিত শর্মার দল ১-০ গোলে পিছিয়ে গেছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি বিশাখাপত্তমে শুরু হবে ভারত-ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় টেস্ট।