মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা নারীর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সমতা অর্জনে সমাজের মূল বাধাগুলি চিহ্নিত করে উন্নয়নশীল দেশে চাহিদাভিত্তিক ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবন, প্রযুক্তি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে সহায়তার জন্য জি-২০ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সচেতনতা তৈরি করতে হবে এবং নারীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাসহ ডিজিটাল দক্ষতা বিকাশে উৎসাহিত করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা গতকাল (বুধবার) ভারতের গুজরাট, গান্ধীনগরে তিন দিনব্যাপী ‘জি-২০ মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স অন উইমেন্স এ্যাম্পাওয়ারমেন্ট সম্মেলনে ডিজিটাল ‘স্কিলিং ফর ইউমেন এ্যাম্পাওয়ারমেন্ট’ শিরোনামে মন্ত্রী পর্যায়ের সেশনে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
সম্মেলনের উদ্বোধন পর্বে ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদান করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি জুবিন ইরানী।
প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন নীতিমালা ও উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা “ডিজিটাল বাংলাদেশ” সফলভাবে সম্পন্ন করার পর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ অভিযাত্রা শুরু করেন। এই নতুন অভিযানের আওতায় প্রযুক্তির সমর্থনে পরিচালিত হবে বাংলাদেশের সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। জাতির পিতা সংবিধানে নারী সমান অধিকার নিশ্চিত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে রোল মডেল সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে আইসিটিতে নারীর অংশগ্রহণ ৩০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা প্রণয়ন করেছে। বাংলাদেশের এই প্রযুক্তি-নির্ভর উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নারীরা নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার সমান সুযোগ পাবে যা তাদেরকে উদ্ভাবন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ২০৩০ সালে কর্মক্ষেত্রে সমতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সহায়তা করবে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, সারা দেশে প্রায় ৫০০০ ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেখানে অর্ধেকেরও বেশি নারী কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমান সরকার প্রযুক্তি ভিত্তিক ” তথ্য আপা ” প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশের প্রায় ২০ মিলিয়ন গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশে ৫২ মিলিয়ন মোবাইল ব্যবহার করছে। মোবাইল ফিনানসিয়াল সিস্টেমের মাধ্যমে মা ও শিশু সহায়তা ভাতা, উপবৃত্তি ও গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন প্রদান করা হচ্ছে। প্রান্তিক মহিলাদের জন্য সাথী ডিজিটাল আর্থিক সেবা এজেন্ট নেটওয়ার্ক বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এসময় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ, জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ (যুগ্মসচিব) মনিরা বেগম ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা উপাস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে জি-২০ ভুক্ত দেশের নারী উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীগণ বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে এ বছর জি-২০ তে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া ইউএন উইমেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, আইএমএফ, এডিবি, ইউনিসেফ, আইএলও এর প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছে। ভারত এবার আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার শীর্ষ সংগঠন জি-২০’র সম্মেলনের আয়োজক দেশ।
মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের আগে প্রতিমন্ত্রী ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি জুবিন ইরানী, ইন্ডিয়া জি-২০ এর চিফ কোঅর্ডিনেটর হর্ষবর্ধণ শ্রিংলা ও ইউএন ইউমেনের চিফ অব স্টাফ মাহামুদ নাসিরীর সাথে সাক্ষাত করেন।